|
|
|
|
প্রতি থানায় বিদ্যাসাগরের জন্মদিন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে প্রতিটি থানাকেই কিছু কর্মসূচি করার নির্দেশ দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। করতে হবে সচেতনতা শিবির, পাঠ্যসামগ্রী বিতরণ প্রভৃতি। জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর প্রতিটি থানায় বিদ্যাসাগরের জন্মদিন পালন করা হবে। এলাকার পড়ুয়াদের মধ্যে পাঠ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। তার আগে জেলার বেশ কিছু থানা এলাকায় সচেতনতা শিবির হবে। শিবির হওয়ার কথা নারায়ণগড়, খড়্গপুর লোকাল, ডেবরা প্রভৃতি থানা এলাকায়। কয়েকটি শিবিরে পুলিশ সুপার নিজেও উপস্থিত থাকবেন। কোন থানা এলাকায় কবে শিবির হবে, চলতি সপ্তাহের মধ্যে তার সূচি চূড়ান্ত হওয়ার কথা।
কেন এমন উদ্যোগ? জেলা পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এগোতে হবে। পুলিশ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জনসংযোগ আরও বাড়াতে হবে। তাছাড়া, আমাদের সকলেরই সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।” জেলা পুলিশের ওই সূত্রে খবর, পুলিশ সুপার ইতিমধ্যে প্রতিটি থানাকে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। কোনও ঘটনা ঘটলে দ্রুত তা জেলায় জানাতে হবে। |
নির্দেশ পুলিশ সুপারের |
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন ২৯ সেপ্টেম্বর। |
• সে দিনই জেলার প্রতিটি থানায় কিছু না কিছু কর্মসূচি করতে হবে। |
• কোথাও হবে সচেতনতা শিবির, কোথাও এলাকার
পড়ুয়াদের পাঠ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। |
• কয়েকটি শিবিরে পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ নিজে থাকবেন। |
• পুলিশের জনসংযোগ বাড়াতেই এই উদ্যোগ। |
|
পুলিশের জনসংযোগ প্রথম নয়। এক সময় এই জনসংযোগের জোরেই জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছিল পুলিশ। ফলে, মানুষও পুলিশের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। লালগড়-সহ জঙ্গলমহল যখন উত্তপ্ত, তখন পুলিশের গ্রামের সাধারণ মানুষের দূরত্ব বেড়ে যায়। খাকি পোশাক দেখলেই ভয় পেতেন গ্রামের মানুষ। এই দূরত্বের ফলেই জঙ্গলমহলে অশান্তি মাথাচাড়া দিয়েছিল। দূরত্ব ঘোচাতে শুরু হয় জনসংযোগ। ফুটবল খেলাকেও জনসংযোগের একটা মাধ্যম করা হয়। পুলিশের উদ্যোগে যুবকদের নিয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়। রাজ্যে পালাবদলের পর লালগড়ে আবার ক্রীড়ামন্ত্রী একাদশের সঙ্গে জঙ্গলমহল একাদশের খেলা হয়। ক্রীড়ামন্ত্রী একাদশের হয়ে খেলেন সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলার ফুটবলাররা। জঙ্গলমহল একাদশের হয়ে মাঠে নামেন স্থানীয় যুবকেরা। পরে জঙ্গলমহল এলাকার মেয়েদের জন্যও ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়।
জেলা পুলিশের এক কর্তা মানছেন, “কেউ কেউ গ্রামের যুবকদের বিভ্রান্ত করে। সহজেই তাঁদের ভুল পথে পরিচালিত করে। ঠিক-ভুল বোঝার আগেই যুবকেরা দোষ করে ফেলেন। আমরা তাই যুব সমাজকে আরও বেশি করে পাশে পেতে চাই। আর জনসংযোগের মাধ্যমেই এটা সম্ভব। যুব সমাজকে সচেতন করা গেলে অপরাধমূলক ঘটনাও কমবে।” এদিকে, যুবক সমাজের একাংশ আবার এখন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোও জরুরি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক দ্রব্য কেনাবেচা বাড়ছে। অনেক স্কুল পড়ুয়াও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। মেদিনীপুর- খড়্গপুরের মতো শহর এলাকায় সমস্যা সবথেকে বেশি। যুব- সমাজের একাংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনাও বাড়ছে। বেশ কয়েকটি দুষ্টচক্র মাদক দ্রব্যের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, পুলিশ নিয়মিত নজরদারি না- চালানোর ফলেই ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে।
এখন আবার মহিলারাও এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন। মহিলাদের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় হেরোইন কেনাবেচা চলছে। খড়্গপুরে জুয়া- সাট্টা চালানোর অভিযোগ নতুন নয়। পরিস্থিতি দেখেই জনসংযোগে তত্পর হয়েছে পুলিশ। আগামী দিনে মাদকাসক্তদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করার পরিকল্পনাও রয়েছে। পাশাপাশি, মাদকাসক্তদের বিনামূল্যে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হবে। জেলা পুলিশ সুপার বলছেন, “সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা কিছু কর্মসূচি করি। আগামী দিনেও করব। আসলে সচেতনতার অভাবে এখনও কিছু ঘটনা ঘটে। সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সমান সচেতনতা থাকলে যা ঘটত না। সামাজিক কর্মসূচির মধ্য দিয়েই তো সচেতনতা বাড়ে।” |
|
|
|
|
|