রাফা-রজার প্রথম ইউএস ওপেন সাক্ষাতের জন্য টেনিসমহলকে আরও অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। হয়তো কোনও দিন ফ্লাশিং মেডোয় এই মহাযুদ্ধ হবেই না। কারণ, ছাব্বিশের নাদাল তরতরিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও বত্রিশের ফেডেরার চতুর্থ রাউন্ডে ছিটকে পড়ায় জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে, এ বছরের শেষেই কি ফেড-এক্স’এর যাত্রা শেষ? স্বয়ং রজার ফেডেরার-কে হারের শোকে বিধ্বস্ত দেখালেও অবসর নিয়ে অবশ্য মুখ খুললেন না ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।
|
প্রশ্ন: এগারো বারের মাথায় রব্রেদোর কাছে প্রথম হারের অনুভূতি ঠিক কী রকম?
ফেডেরার: মনে হচ্ছে নিজেই নিজেকে হারিয়েছি। আমার ওপরই ম্যাচটায় পার্থক্য গড়ার দায়িত্ব ছিল। যেটা আমি পারিনি। নিজেই নিজেকে শেষ করলাম। যেটা সত্যিই হতাশাজনক। এ রকম খেললে নাদালকে হারাতে পারতাম না।
প্র: ম্যাচটায় আপনার কী গণ্ডগোল হল?
ফেডেরার: শুরুটা খুব খারাপ করেছি। গোটা ম্যাচেই স্বচ্ছ্বন্দ ছিলাম না। টমি প্রত্যেকটা বল কোর্টে রেখে আমার আরও সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তবে আর্থার অ্যাশ থেকে ম্যাচটা আর্মস্ট্রং স্টেডিয়ামে চলে যাওয়ার জন্য হেরেছি বলাটা আমার দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অজুহাত হবে। আর্মস্ট্রংয়েও আমি প্রচুর প্র্যাক্টিস করেছি। কোর্টের গতিপ্রকৃতি জানতাম। আসলে প্রচুর সুযোগ নষ্ট করেছি। ষোলোটা ব্রেক পয়েন্টের মাত্র দু’টো কাজে লাগাতে পেরেছি।
প্র: পিঠের অবস্থা কি কোনও কারণ?
ফেডেরার: না। পিঠ ঠিকই আছে।
প্র: এই বয়সে কোর্টে কোনও কিছু যখন আপনার পক্ষে যায় না তখন কি নিজের ভেতরে রেগে ওঠেন? নার্ভাস বোধ করেন? আগের মতো ঠান্ডা থাকতে পারেন না?
ফেডেরার: হতে পারে। আত্মবিশ্বাস এমন একটা ব্যাপার যেটা চাপে থাকা মানুষের সব সমস্যার সামাল দেয়। কিন্তু গত তিন মাস আমার খারাপ সময় যাচ্ছে। হয়তো কোনও একটা দিন বা কোনও একটা ম্যাচ ভাল খেলছি। কিন্তু ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছি না। মনে হয়, এই হারের পিছনে সেটাও একটা কারণ। |
প্র: নাদালের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে এখনও মুখোমুখি হতে না পারার আক্ষেপ কতটা?
ফেডেরার: বেশি আক্ষেপ নেই। কারণ ম্যাচটা কোয়ার্টার ফাইনালে হত। ফাইনালে তো নয়!
প্র: বছরের শেষে এটিপি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস খেলার ছাড়পত্রের ব্যাপারে এই মুহূর্তে আপনি সমস্যায়। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম আটের ভেতর থাকার জন্য কি ট্যুর প্রোগ্রাম বা ট্রেনিং শিডিউলে কোনও পরিবর্তন করবেন?
ফেডেরার: ব্যাপারটা নিয়ে ভাবিইনি। তা ছাড়া পরিশ্রমের কোনও বিকল্প হয় না। আমার ট্রেনিং শিডিউলের মূল কথা হল পরিশ্রম।
প্র: সহজাত টাচ প্লেয়ারের খারাপ সময়ে কি তাঁকে আরও বেশি করে অফফর্ম দেখায়? যেটা শ্রমিক শ্রেণির প্লেয়ারদের ক্ষেত্রে ততটা দেখায় না!
ফেডেরার: হয়তো তাই। আমার টেনিস জীবনটাই হলহারলে লোকে আমার খেলায় স্তম্ভিত হয়ে যায়। আর জিতলে বলে এটাই সেরা টেনিস। আমি শুধু নিজের সেরা চেষ্টাটা করে যাই। সেটা কখনও ফল দেয়, কখনও দেয় না। কিন্তু আমার চেষ্টার কোনও ক্রটি আগেও ছিল না। ভবিষ্যতেও থাকবে না।
|
ফেডেরারের
এক ডজন |
২০০২-এর পর ফেডেরার এ বছরই সবচেয়ে বেশি প্লেয়ারের কাছে হেরেছেন।
৯ জন। মরসুমে ১৩টি টুর্নামেন্ট খেলে ১২টি হার। একমাত্র খেতাব হ্যাল-এ। |
ব্যর্থ ১২-র হিসেব |
অস্ট্রেলীয় ওপেন
(সেমিফাইনাল): অ্যান্ডি মারে (৩)*
রটারডাম
(কোঃ ফাইনাল): জুলিয়েন বেনেতেউ (৩৯)*
দুবাই
(সেমিফাইনাল): টমাস বার্ডিচ (৬)*
ইন্ডিয়ান ওয়েলস
(কোঃ ফাইনাল): রাফায়েল নাদাল (৫)*
মাদ্রিদ (তৃতীয় রাউন্ড): কেই নিশিকোরি (১৬)*
রোম (ফাইনাল): রাফায়েল নাদাল (৫)*
ফরাসি ওপেন
(কোঃ ফাইনাল):
জো সঙ্গা (৮)*
উইম্বলডন
(দ্বিতীয় রাউন্ড): সের্জেই স্টাকোভস্কি (১১৬)*
হামবুর্গ (সেমিফাইনাল): ফেডেরিকো ডেলবনিস (১১৪)*
স্তাদ
(দ্বিতীয় রাউন্ড):
ড্যানিয়েল ব্র্যান্ডস (৫৫)*
সিনসিনাটি (কোঃ ফাইনাল): রাফায়েল নাদাল (৩)*
যুক্তরাষ্ট্র ওপেন (চতুর্থ রাউন্ড): টমি রব্রেদো (২২)*
|
* ব্র্যাকেটে বিপক্ষের বিশ্ব র্যাঙ্কিং |
|