|
|
|
|
লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের বৃহৎ
ঝাড়খণ্ডের দাবি জেএমএমের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের ‘বৃহৎ ঝাড়খণ্ড’ গঠনের দাবি ফিরছে ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে। এ রাজ্যের সীমানায় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ছত্তীসগড়ের জঙ্গল-অধ্যুষিত জেলাগুলিকে ঝাড়খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলছে রাজনৈতিক দলগুলি। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, জঙ্গলের আদিবাসীদের ‘ভোটব্যাঙ্ক’ দখল করতেই ওই দাবি তুলছে রাজনৈতিক দলগুলি।
বিরোধী দল আজসু জানিয়েছে, ওই রাজ্যগুলির ঝাড়খণ্ড-সীমানার শহর-গ্রামে লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী দেওয়া হবে। এমনই জানিয়েছেন আজসু মুখপাত্র দেবশরন ভগত। একই দাবি রয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চারও। ‘স্টেট অর্গানাইজেশন কমিটি’ গঠনের আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে জেএমএম। রাজ্যের প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা সূর্য সিংহ বেসরা ইতিমধ্যেই এ নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করেছেন।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার মহাসচিব সুপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের মতো জেলাগুলিতে আদিবাসীরা অবহেলিত। ওই আদিবাসী মানুষদেরই পূর্বপুরুষরা এক সময় ঝাড়খণ্ড তৈরির আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই জেলাগুলি অন্য রাজ্যের অধীনে থাকায় তাঁদের কোনও উন্নতি হয়নি। তাঁদের জমি দখল করে অন্য লোক মুনাফা করেছে। আদিবাসীরা ভিটেছাড়া হয়েছেন। সুপ্রিয়বাবুর বক্তব্য, ঝাড়খণ্ডের অধীনে এলে ওই আদিবাসীদের জমি টেন্যান্সি আইনে সুরক্ষিত করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গের যে সব জেলা ঝাড়খণ্ডের অধীনে নিয়ে আসার দাবি উঠছে, তারমধ্যে রয়েছে শান্তিনিকেতন-সহ বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বর্ধমানের কয়লাখনি এলাকাগুলি। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, কেওনঝড় এবং সুন্দরগড়কেও বৃহৎ ঝাড়খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলেছে জেএমএম।
সুপ্রিয়বাবুর কথায়, “পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশার ওই জেলাগুলিতে মূলত সাঁওতাল এবং মুণ্ডা সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। সে জন্যই ওই জেলাগুলি নেওয়ার দাবি করা হয়েছে। তেলঙ্গানা, গোর্খাল্যাণ্ড আন্দোলনকে গুরুত্ব দেওয়া হলে বৃহৎ ঝাড়খণ্ডের দাবিকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
আজসু মুখপাত্রের কথায়, “বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা আদিবাসীরা এখনও বৃহৎ ঝাড়খণ্ড গঠনের স্বপ্ন দেখেন। ওঁরাই ঝাড়খণ্ড আন্দোলনের সৈনিক ছিলেন। অন্য রাজ্যে থাকতে হওয়ায় তাঁরা শান্তি পাচ্ছেন না।”
বৃহৎ ঝাড়খণ্ডের দাবি কখনও তুলেছেন জয়পাল সিংহ, কখনও শিবু সোরেন। কিন্তু তা স্বীকৃতি পায়নি। মোর্চা এবং আজসু-র বক্তব্য, ঝাড়খণ্ড গঠনের সময় ভৌগোলিক দিক থেকে এমনভাবে দক্ষিণ বিহারকে আলাদা করা হয়েছে যার ফলে আদিবাসীরা পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা কিংবা ছত্তীসগড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছেন।
রাজনৈতিক মহলের ব্যখ্যা, আদিবাসীদের অন্য রাজ্যে থাকা ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। যার জেরে ১৩ বছর আগে নতুন রাজ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার পরও এখনও কোনও রাজনৈতিক দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বারবার সরকার পড়েছে। লোকসভা নির্বাচনে আরও বেশি আদিবাসী সমর্থন পেতেই ফের বৃহৎ ঝাড়খণ্ডের বিষয়টি ফিরিয়ে আনতে চাইছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, আজসুর মতো আঞ্চলিক দলগুলি। |
|
|
|
|
|