‘পুলিশি জুলুমের’ প্রতিবাদে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার হাওড়া স্টেশন বয়কটের ডাক দিল ছ’টি ট্যাক্সিমালিক এবং চালক সংগঠন। ট্যাক্সি সংগঠনগুলির অভিযোগ, হাওড়া স্টেশন চত্বরে চালকদের কাছ থেকে জোর করে টাকা তুলছে পুলিশ। হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের তরফে অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের পাল্টা অভিযোগ, ট্যাক্সিচালকেরাই জোর করে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নিতেন। পুলিশ তা বন্ধ করে দিয়েছে।
মঙ্গলবার ট্যাক্সি সংগঠনগুলির নেতারা মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে দেখা করে অবিলম্বে হাওড়া স্টেশনে ‘পুলিশি জুলুম’ বন্ধ করার দাবি জানান। পরে বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বিমল গুহ বলেন, “হাওড়া স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি ঢুকলেই বিভিন্ন অজুহাতে চালকদের কাছ থেকে টাকা তুলছে পুলিশ। তার প্রতিবাদেই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।” হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডের পাল্টা দাবি, “ট্যাক্সিওয়ালারাই জোর করে বেশি ভাড়া আদায় করেন। আমরা তা বন্ধ করে দিয়েছি। ট্যাক্সি সংগঠনগুলি যে অভিযোগ করছে, তা সত্যি নয়। এ রকম কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি।” কমিশনারের আরও দাবি, “ওখানে কোনও রকম জুলুম হলে তো সিসিটিভি-র ছবিতে সেটা ধরা পড়বেই। সেই ফুটেজ দেখে ট্যাক্সি সংগঠনের নেতারা বরং অভিযোগ প্রমাণ করুন।”
ট্যাক্সি সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনার পরে পরিবহণমন্ত্রী মদনবাবু বলেন, “আমি ওঁদের ট্যাক্সি বন্ধ না-করার অনুরোধ জানিয়েছি। তবে সংগঠনগুলির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।”
হাওড়ায় ‘পুলিশি জুলুম’ নিয়ে আন্দোলনে নামার পাশাপাশি নতুন ট্যাক্সির পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মঘট নিয়ে মুচলেকা দেওয়ার বিরুদ্ধে আরও জোরালো পদক্ষেপ করার হুমকি দিয়েছে ট্যাক্সি সংগঠনগুলি। সম্প্রতি কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় নতুন ট্যাক্সির পারমিট দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে পরিবহণ দফতর। সেখানে নিয়ম হয়েছে, পারমিট পেতে হলে ওই ট্যাক্সিমালিককে মুচলেকা দিয়ে বলতে হবে, তিনি পরবর্তী সময়ে কোনও ধর্মঘটে সামিল হবেন না।
এ দিন বিমলবাবুর বক্তব্য, ধর্মঘট করা যে কোনও মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। তিনি বলেন, “১০ দিনের মধ্যে সরকার ওই শর্ত প্রত্যাহার না করলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।” ট্যাক্সি সংগঠনগুলির এই দাবির প্রেক্ষিতে পরিবহণমন্ত্রী এ দিন বলেন, “আমি শুধু অনুরোধ করব, ট্যাক্সি-মালিকেরা মন থেকে ধর্মঘট বিষয়টিই পুরোপুরি মুছে ফেলুন।” |