বিদ্যুৎ চুরি, ফাঁকি পড়ছে রাজস্ব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি
|
জেলা জুড়ে রমরমিয়ে চলছে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার। ফলে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি পড়ছে। জেলা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির হিসেব মতো ৬০ শতাংশের বেশি বিদ্যুতের টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে জানা গিয়েছে, সব চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে সাবমার্সিবল পাম্পের ক্ষেত্রে। বহু চাষি হুকিং করে ওই পাম্প চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের কথা অবশ্য বেশ কিছু চাষি স্বীকারও করে নিয়েছেন। নানুর এলাকার রতনপুর গ্রামের চাষি আব্দুল রফিক শেখ, গোদডিহি গ্রামের মহম্মদ বদরুজ্জaামানের দাবি, “সাবমার্সিবল পাম্প চালানোর জন্য বিদ্যুৎ দফতরের আবেদন করেও সংযোগ পাইনি। তাই ধান গাছ বাঁচাতে হুকিং করতে বাধ্য হয়েছি।” জেলা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির সার্কেল ম্যানেজার কল্লোলকান্তি দাস তাঁদের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, “কিছু নিয়মকানুন মেনে সাবমার্সিবল পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। তা ছাড়া, পরিকাঠামোর অভাবে অনেককেই সংযোগ দেওয়া যায়নি।” কল্লোলবাবুর কাছ থেকে জানা গিয়েছে, জেলায় ১৮০০ চাষি ৮ হাজার টাকা করে জমা দিয়েও বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। আরও চার হাজার চাষি বিদ্যুতের জন্য আবেদন করেছেন। তাঁরাও সংযোগ পাননি। কল্লোলবাবুর প্রতিক্রিয়া, “আমরা অসহায়।”
অন্য দিকে, রাজীব গাঁধী বিদ্যুদয়ন প্রকল্পে জেলার প্রায় দেড় লক্ষ বিপিএল পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তাতে ওই সব বাড়িতে মাত্র একটি করে ১১ ওয়াটের আলো জ্বালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আরও আলো জ্বালালে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। কিন্তু সে সবের তোয়াক্কা না করে ওই সব পরিবারগুলি একাধিক আলো জ্বালাচ্ছেন। টিভি ও পাখা চালাচ্ছেন।
অ্যাবেকার জেলা সভাপতি মদন ঘটক বলেন, “বিপিএল ভুক্ত পরিবার তো গরিব। তাদের অনেকের ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে। একটি ১১ ওয়াটের আলো দিয়ে কী কবে!” বিদ্যুৎ চুরি যে হচ্ছে, সে কথা তিনিও স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে এর জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বেশ কিছু লোকজনকে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে যোগসাজোস করে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে বলে দাবি মদনবাবুর। অবশ্য বিদ্যুৎ দফতরের সার্কেল ম্যানেজার কল্লোলবাবু বলেন, “বিপিএলভুক্ত পরিবারগুলি একাধিক আলো, টিভি, পাখা চালাচ্ছেন তাও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু ওই লাইন ব্যবহার করে হিটারে ধান সিদ্ধ, মুড়ি ভাজার কাজও চলছে। এরকম চলতে থাকলে জেলা জুড়ে ঘন ঘন লোডশেডিং করা ছাড়া উপায় থাকবে না।” |