প্রধান নির্বাচন করেও তৃণমূলের ক্ষোভ-বিক্ষোভে পড়ে ব্লক প্রশাসন তা বাতিল করায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সিপিএম। এরই মধ্যে আবার সভা ডেকে প্রধান ও উপপ্রধান বেছে নিল সালানপুরের ব্লক প্রশাসন। তবে প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হাইকোর্টের বিচারপতি যা রায় দেবেন তা-ই মেনে চলা হবে।
সালানপুরের বাসুদেবপুর-জেমারি পঞ্চায়েতে ১০টি আসনের মধ্যে সিপিএম এবং তৃণমূলদু’পক্ষই পাঁচটি করে আসন জিতেছে। সেখানে প্রধান নির্বাচন নিয়ে জট তৈরি হয়েছে ১৬ অগস্ট থেকে। সে দিন তফসিলি জাতির মহিলার জন্য সংরক্ষিত প্রধানের পদে প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম এবং তৃণমূল প্রার্থীদের জাতিগত শংসাপত্র দেখাতে বলেন যুগ্ম বিডিও অঞ্জন চৌধুরী। সিপিএম প্রার্থী তা দেখালেও তৃণমূল প্রার্থী সেটি বাড়ি থেকে আনার জন্য সময় চান। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা আনতে না পারায় অঞ্জনবাবু সিপিএম প্রার্থীকে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেন। লটারির মাধ্যমে উপপ্রধান পদে নির্বাচিত হন তৃণমূল সদস্য।
কিন্তু প্রধান বাছার প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষে তৃণমূল ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের প্রায় সাত ঘণ্টা ঘেরাও করে। শেষে বিডিও প্রশান্ত মাইতি পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল করলে বিক্ষোভ থামে।
এর পরেই প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করে সিপিএম। কীসের ভিত্তিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল করা হল, সেই প্রশ্ন তোলে তারা। ব্লক প্রশাসন অবশ্য ৩ সেপ্টেম্বর ফের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক হবে বলে জানিয়ে দেয়। সেই মতো মঙ্গলবার বৈঠক বসে। তৃণমূলের পাঁচ জন এলেও সিপিএমের কেউ আসেননি। তৃণমূলের থেকেই প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন হয়।
সিপিএমের দাবি, ব্লক প্রশাসনের আগের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করেছে। এখন বিষয়টি বিচারাধীন। তাঁদের আইনজীবী সে কথা ব্লক প্রশাসনকেও জানিয়েছেন। তাই এ দিনের নির্বাচন প্রক্রিয়া অসাংবিধানিক বলে দাবি সিপিএমের। বিডিও প্রশান্তবাবু বলেন, “আমরা মঙ্গলবার হাইকোর্টের এক আইনজীবীর নোটিস পেয়ে এই মামলার বিষয়টি জেনেছি। কিন্তু বিচারপতির কোনও আদেশনামা আমাদের হাতে আসেনি। তা পেলে তাঁর নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করব।”
মঙ্গলবার এই পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান বাছা হলেও এ দিন ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি স্থগিত রেখেছে ব্লক প্রশাসন। তৃণমূলের স্থানীয় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাপ্পু উপাধ্যায় জানান, আইনি জটিলতার অভিযোগে যদি তাঁদের প্রধান ও উপপ্রধানের পদ দু’টি বাতিল করা হয়, তবে তাঁরাও আদালতে দ্বারস্থ হবেন।
এ দিন এথোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের দিন ছিল। সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূলের সদস্যেরা এলেও প্রধানের পদে কেউ দাঁড়াননি। উপপ্রধানের পদটি তফসিলি জাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। পঞ্চায়েতে একমাত্র জয়ী তফসিলি জাতির মহিলা কংগ্রেসের কৃষ্ণা ধীবর সেই পদে নির্বাচিত হন।
|