পুরনো সিদ্ধান্ত অনুমোদন না হওয়ায় তিন মাস অধিবেশন না ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আসানসোলের চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি। অগস্ট মাসের অধিবেশন ইতিমধ্যেই হয়নি। তাঁর এই সিদ্ধান্তে শহরের উন্নয়নমূলক কাজ ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করেছে বামফ্রন্ট।
পুরসভায় গৃহীত বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন ও উন্নয়নমূলক কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিমাসে বৈঠক ডেকে কাউন্সিলরদের মতামত নেওয়া হয়। কিন্তু অগস্ট মাস শেষ হওয়ার পরেও অধিবেশন হল না কেন তা খোঁজ নিতে গিয়ে বাম কাউন্সিলরেরা পুর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারেন। কিন্তু চেয়ারম্যান হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, পুরসভার জুন মাসের অধিবেশনে সর্বসম্মত ভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি জুলাই মাসের অধিবেশনে অনুমোদনের জন্য তোলা হয়। কিন্তু উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর তা অনুমোদন করেননি। চেয়ারম্যান বলেন, “পুর আইনে আছে পুরনো সিদ্ধান্ত অনুমোদন না হলে পরের তিনমাস আর অধিবেশন ডাকা যাবে না। অবশ্য তিন চতুর্থাংশ কাউন্সিলর যদি চেয়ারম্যানের কাছে অধিবেশন ডাকার আর্জি জানান তবে অধিবেশন ডাকা যায়।” তাঁর দাবি, পুরসভার ৩৫ জন কাউন্সিলর তাঁর কাছে স্বাক্ষর করে অধিবেশন ডাকার আর্জি জানালে তিনি তা ডাকবেন।
কিন্তু সিদ্ধান্তগুলি পাশ হয় নিই বা কেন? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই মাসের অধিবেশনে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোটের মাত্র ন’জন কাউন্সিলর এবং বামফ্রন্টের ১৬ জন উপস্থিত ছিলেন। সিদ্ধান্তগুলি উত্থাপিত হতেই বেঁকে বসেন বাম কাউন্সিলররা। সংখ্যালঘু হওয়ায় বিপাকে পড়েন সরকার পক্ষও। এ অবস্থায় অধিবেশন মুলতুবি করে দিয়ে সরকার পক্ষের মান বাঁচান জিতেন্দ্রবাবু। তারপরে পুরনো সিদ্ধান্ত পাশ না হওয়ায় তিন মাস অধিবেশন না ডাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বামেরা। বিরোধী নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়ের অভিযোগ, পুর আইনের কথা বলে চেয়ারম্যান বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তিনি সরকার পক্ষকে আড়াল করার কৌশল নিয়েছেন। তাপসবাবুর দাবি, “মুলতুবি হওয়া অধিবেশন চেয়ারম্যান আবার ডাকতেই পারেন। তা না করে তিনি অগণতান্ত্রিক আচরণ করছেন।” তাপসবাবু আরও জানান, আর একমাস পরেই উৎসবের মরসুম শুরু হয়ে যাবে। শহরের নানা প্রান্তে উন্নয়নমূলক কাজ করাতে হবে। এসব কাজও পুর অধিবেশনে অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার রীতি রয়েছে। ফলে অধিবেশন যদি না ডাকা হয় থমকে যাবে সেসবও। তবে মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, উন্নয়নমূলক কোনও কাজ ব্যাহত হবে না। |