সালানপুর ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচনের জন্য ফের বৈঠক ডেকেছে ব্লক প্রশাসন। ৩ সেপ্টেম্বর বাসুদেবপুর-জেমারি ও এথোড়া পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে বাসুদেবপুর-জেমারিতে ব্লক প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে মামলা করেছে সিপিএম। এথোড়াতেও ফের নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বাসুদেবপুর-জেমারি পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে সিপিএম ও তৃণমূল ৫টি করে আসন পায়। প্রধান পদটি তফসিলি জাতি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ১৬ অগস্ট নির্বাচনের নির্ধারিত দিনে উভয়পক্ষ নিজেদের প্রধান দাঁড় করায়। নির্বাচনী পরিচালক যুগ্ম বিডিও অঞ্জন চৌধুরী দুই প্রার্থীকে তফসিলি জাতি শংসাপত্র দেখাতে বলেন। সিপিএম প্রার্থী তা দেখালেও তৃণমূল প্রার্থী জানান সেটি বাড়িতে আছে। যুগ্ম বিডিও দু’মিনিটের মধ্যে সেটি দাখিল করার নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে তিনি সেটি আনতে না পারায় সিপিএম প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে উপপ্রধান পদটির জন্য লটারিতে জেতেন তৃণমূল প্রার্থী। পরে ফলাফল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিডিও ও যুগ্ম বিডিওকে প্রায় সাত ঘন্টা ঘেরাও করে রাখে তৃণমূল। চাপের মুখে ফলাফল বাতিল করে ব্লক প্রশাসন। ফের নির্বাচনের দিন হয় ৩ সেপ্টেম্বর। তবে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে সিপিএম। দলের বারাবনি জোনাল কমিটির সম্পাদক অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাইকোর্টে আবেদন করে জানতে চেয়েছি, ব্লক প্রশাসন কী অবস্থায় আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে।” ব্লক প্রশাসনের জবাব, তাঁরা হাইকোর্ট থেকে কোনও চিঠি পাননি।
এথোড়া পঞ্চায়েতেও ১৯ অগস্ট বৈঠক ডাকা হয়। এখানে পাঁচটি আসনের মধ্যে সিপিএম ও কংগ্রেস দু’টি করে ও তৃণমূল একটি আসন পায়। কিন্তু বৈঠকে প্রয়োজনের কম সদস্য হাজির হওয়ায় নির্বাচন বাতিল হয়ে যায়। কংগ্রেসের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন না। তাদের যুক্তি, দলের তরফে প্রধানের নাম প্রস্তাব করা হলেও সমর্থক মিলবে না। ফলে তাঁরা ভোটাভুটিতে যাবেন না, বৈঠকেও থাকবেন না। সিপিএমও একই যুক্তিতে প্রধান নির্বাচনে বিরত থাকে। তবে বৈঠকে যোগ দেয়। তবে আগামী বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেসের প্রদেশ সদস্য শ্যামল মজুমদার বলেন, “আমরা এই বৈঠকেও উপস্থিত থাকছি না।” সিপিএমের বারাবনি জোনাল কমিটির সম্পাদক অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কাউকে সমর্থন করছি না। কারও থেকে সমর্থন নিচ্ছিও না।” ফলে ৩ সেপ্টেম্বরও প্রধান নির্বাচন হবে না বলেই প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলের ধারণা। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, “সালানপুরের বিডিও নিয়ম মেনে বৈঠক ডেকেছেন। কী হয় দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।” এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কী করা উচিত সে বিষয়ে মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, এ অবস্থায় বিডিওকে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের প্রশাসক হিসাবে কাজ করতে হয় এবং ছ’মাসের মধ্যে ফের নির্বাচন করতে হয়। তবে তার জন্য ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সব পক্ষকেই। |