|
|
|
|
ধর্ষণে অভিযুক্তদের ধরার দাবি, মিছিল
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি ও বানারহাট |
মরাঘাট চা বাগানের বাসিন্দা তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হলেন আরএসপি’র স্থানীয় মহিলা বিধায়ক কুমারী কুজুর। রবিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ওই কিশোরীকে দেখতে যান বীরপাড়া-মাদারিহাটের ওই মহিলা বিধায়ক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিটু সংগঠনের নেত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক সুখমইত ওঁরাও, ধূপগুড়ির মহিলা বিধায়ক মমতা রায়। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে দেখা করে ওই তরুণীর চিকিৎসার বিস্তারিত খোঁজ নেন তাঁরা। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয় তরুণীর শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। ঘটনার পর পুলিশ অভিযুক্তক্তদের গ্রেফতার না করতে পারায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দোষীদের গ্রেফতার-সহ কঠোর শাস্তির দাবিতে এ দিন বিন্নাগুড়িতে মিছিল বের করে আরএস পি। বিকালে মরাঘাট চা বাগান-সহ আশেপাশের কয়েকটি বাগানের বাসিন্দারা মিছিলে অংশ নেন। কুমারী কুজুর বলেন, “তরুণীর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। এখনও তাঁর হুঁশ ফেরেনি। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বা প্রশাসনের কর্তারা ওই তরুণীর ব্যাপারে উদাসীন। তাঁদের কেউ হাসপাতালে গিয়ে তাঁর খোঁজ নেননি। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।” গত শনিবার সিটুর জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়াযুল হক মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতলে গিয়ে তাঁর খোঁজ করেন। তিনিও তরুণীর জন্য উন্নত চিকিৎসার দাবি তুলেছেন। এ দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সুপার সব্যসাচী দাস জানান, “তরুণীর চিকিৎসা চলছে। তাঁর সঙ্কট কাটেনি।” চিকিৎসকদের মতে তাঁকে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা হয়েছিল। তাতেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই তরুণী। |
|
প্রতিবাদ। বানারহাটে রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি। |
নিখরচায় তরুণীর চিকিৎসা ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছেন এই এলাকার বান্দিারা। চা বাগানের মহিলা শ্রমিক উর্মিলা বরাইকের কথায়, “তরুণীর পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা খরচ বহন করার সামর্থ্য নেই। সরকার তরফে যাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।” মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো-সহ দোষীরা দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন তারা। না হলে বড় ধরনের আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বানারহাট থানার মরাঘাট চা বাগানে ওই তরুণীর বাড়ি। দিল্লিতে কাজ করেন। সেখানে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁর সঙ্গে বিয়ের কথাও পাকা। ওই যুবককে নিয়েই সম্প্রতি বড়িতে আসেন তরুণী। বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের তোড়জোর চলছিল। এই পরিস্থিতিতে ওই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা। তরুণীর বাবা বাগানেরই কর্মী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ অগস্ট রাতে বানারহাট থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল ওই তরুণী। বিন্নাগুড়ি থেকে বাজার করে ফেরার সময় ধর্ষণের শিকার হন তিনি। দুষ্কৃতীরা তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করে। তরুণী অচৈতন্য হয়ে লুটিয়ে পড়লে মারা গিয়েছে ভেবে তাঁকে ঝোপের মধ্যে ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা। রাস্তার ধারে ঝোপে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েকজন থানায় খবর দিলে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। প্রথমে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে, সেখান থেকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে এবং পরে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার পর সন্দেহজনক ভাবে এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে পুলিশ সিরাজ আনসারি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। তবে ওই যুবক জানায়, ওই তরুণীর বাড়ির কাছেই সে থাকে। তাই খোঁজ করতে গিয়েছিল। দু’ জনকে বাইকে করে পালাতে দেখেছে সিরাজ। পুলিশ অবশ্য এখন পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পেরেনি।
|
পুরনো খবর: নাবালিকাকে ধর্ষণের নালিশ |
|
|
|
|
|