|
|
|
|
সভায় দলবদল, কংগ্রেস ছেড়ে যোগদান তৃণমূলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আইনূল হক যোগ দিলেন তৃণমূলে। একই সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেন ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা কংগ্রেস নেতা প্রণবেশ মণ্ডলও। রবিবার তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ফাঁসিদেওয়া হাইস্কুলের মাঠে এক সভায় তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেন। গৌতমবাবুর দাবি, ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির ৭ জন কংগ্রেস সদস্যও এ দিন তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন। অন্যন্য দলের কর্মী-সমর্থক মিলিয়ে আরও প্রচুর লোক এ দিন যোগ দিয়েছেন বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব মানতে নারাজ।
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকার অবশ্য গৌতমবাবুর দাবি মানতে নারাজ। শঙ্করবাবুর পাল্টা দাবি, অনেককেই জোর করে এদিন দলবদলের সভায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির যে সদস্যরা এ দিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে অনেকেই কংগ্রেসে রয়েছেন। যাঁরা গিয়েছেন দু’এক দিনের মধ্যে তাঁরাও ফিরে আসবেন। গৌতমবাবু বলেন, “উন্নয়নের স্বার্থে সমস্ত দল থেকে নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে আরও বহু কর্মী তৃণমূলে যোগ দিতে প্রস্তুত। আমরা এক বছরের মধ্যে ফাঁসিদেওয়ায় উন্নয়ন করে এখানকার চেহারা বদলে দেব।” শঙ্করবাবু বলেন, “গোটা তৃণমূল দলটাই কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তৈরি হয়েছে। তাতে কংগ্রেসের কোনও ক্ষতি হয়নি। ফাঁসিদেওয়া থেকে যাঁরা তৃণমূলে গিয়েছেন তাঁরা বেইমান। বেইমান সব দলেই থাকে।” |
|
মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা আইনুল হক এবং ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির
সভাপতি প্রণবেশ মণ্ডলের হাতে তৃণমূলের পতাকা দিচ্ছেন গৌতম দেব।— নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের সভায় উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুভাষ রায়, মইজুদ্দিন আহমেদ, সইদুল রহমান, উর্মিলা মিঞ্জ, হাফিজুর রহমানরা। ছিলেন আইনূল হক এবং প্রণবেশ মণ্ডল। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উর্মিলা মিঞ্জকে নিয়ে এ দিন ধন্দ দেখা দেয়। কংগ্রেস এবং তৃণমূল দু’ দলই দাবি করে উর্মিলা তাঁদের দলে। উর্মিলা নিজে অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলে যোগ দিলেন। আইনূল হক বলেন, “উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে উন্নয়ন করছেন ফাঁসিদেওয়ায় সেই উন্নয়ন হবে বলে আশ্বাস পেয়েছি। গৌতমবাবুও একই আশ্বাস দিয়েছেন।” প্রণবেশবাবু জানান, “রাজ্য সরকারের থেকে সহায়তা মিলছিল না। এলাকার উন্নয়নে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।” সম্প্রতি প্রণবেশবাবু ছাড়া কংগ্রেসের বাকি ১২ জন সদস্যকে হাজির করিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করেন এঁরা সকলে কংগ্রেসে। তবে প্রণবেশবাবুকে কংগ্রেস নেতৃত্ব ডাকলেও তিনি বৈঠকে ছিলেন না। যে সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা জানিয়েছিলেন কংগ্রেসেই রয়েছেন। এ দিন তাঁদের একাংশকে তৃণমূলে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। এ দিন যাঁদের দলত্যাগী বলে দেখানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল তার মধ্যে কারচুপি রয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি থেকে ফাঁসিদেওয়া ব্লক সভাপতি ফণি রায়ও সেই দাবি করেছেন। মণি রায় বলেন, “সবাইকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উর্মিলা মিঞ্জ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে যা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। তিনি কংগ্রেসেই।’’ দলবদলের মঞ্চে গৌতমবাবু এ দিন মালা পরিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন উর্মিলা দেবীকে। তাও তিনি কংগ্রেস ছাড়েননি বলে কী ভাবে দাবি উঠছে? শঙ্করবাবুর জবাব, “রাজনীতিতে এক ঘন্টায় বহু চিত্রনাট্য পরিবর্তন হয়। দু’একদিন অপেক্ষা করলেই সম্পূর্ণ চিত্রটা পরিষ্কার হবে।” মাটিগাড়াতে একটি অনুষ্ঠানে শতাধিক তৃণমূল সমর্থক কংগ্রেসে যোগ দেন বলে কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়। |
|
|
|
|
|