বছর না কাটতেই ফের যশোহর রোডের হাল বেহাল।
বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট থেকে নিউ ব্যারাকপুর মোড় পর্যন্ত ভাঙাচোরা রাস্তা সারানো হয়েছিল গত বছর পুজোর আগে। তখন যশোহর রোড-সহ রাজ্যের বেশ কিছু রাস্তার হাল এতই খারাপ হয়েছিল যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, পুজোর আগেই ওই সব রাস্তা সারাতে হবে। নির্দেশ মতো যশোহর রোডের সবচেয়ে বেহাল অংশ এক নম্বর গেট থেকে নিউ ব্যারাকপুর মোড় পর্যন্ত সারানো হয়েছিল। বুজে গিয়েছিল সব গর্ত। মসৃণ রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছিল। কিন্তু বছর না পেরোতেই যশোহর রোড ফের ‘দুর্গম’।
রাস্তা দিয়ে কয়েক কদম এগোলেই বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির জলে সেগুলি ভর্তি হয়ে আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গর্তগুলি কত গভীর বুঝতেই পারছেন না চালকেরা। ফলে মাঝেমধ্যেই ওই গর্তে গাড়ি পড়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে। কোথাও আবার রাস্তার চটলা পুরো উঠে এমন পরিস্থিতি যে, গাড়ি গেলেই উড়ছে প্রবল ধুলো। রাস্তার পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে পাথরকুচি। কোথাও আবার পিচের অস্তিত্বটুকুও নেই।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, এক বছরের মধ্যে কেন এই রাস্তার হাড়গোড় বেরিয়ে গেল? সেই সঙ্গে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, ফের কবে সারানো হবে এই রাস্তা? |
এত দিন বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট থেকে বিরাটি মোড় পর্যন্ত অংশের দায়িত্বে ছিল ন্যাশনাল হাইওয়ে ডিভিশনের কৃষ্ণনগর শাখা। সম্প্রতি ওই অংশটি চলে গিয়েছে পূর্ত দফতরের অধীনে। ন্যাশনাল হাইওয়ে ডিভিশনের কৃষ্ণনগর শাখার আধিকারিকদের মতে, এক নম্বর গেট থেকে বিরাটি মোড় পর্যন্ত অংশে দু’ধারের নিকাশি নালার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তাই জল জমে থাকে। সেই জমা জলই রাস্তার বিটুমিনকে দ্রুত ভেঙে দিচ্ছে। ফলে রাস্তাও খারাপ হচ্ছে দ্রুত। কৃষ্ণনগর শাখার প্রোজেক্ট অধিকর্তা জগন্নাথ সামন্ত বলেন, “দু’ধারের নিকাশি খারাপ থাকায় রাস্তা দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে ঠিকই। তবে যে ঠিকাদার সংস্থা রাস্তা মেরামত করেছিল, তারাও দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না। ওই সংস্থার সঙ্গে তিন বছর চুক্তিবদ্ধ ছিলাম। কিন্তু রাস্তার এই বেহাল দশার জন্য চুক্তি বাতিল হয়েছে। রাস্তা মেরামতি বাবদ যে টাকা ওই সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকা তাদের থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে।” জগন্নাথবাবু বলেন, “এই বছর থেকে রাস্তার ওই অংশের দায়িত্ব নিয়েছে পূর্ত দফতরের এন এইচ ডিভিশন শাখা। ওই ঠিকাদার সংস্থার কাছ থেকে যে টাকা কাটা হয়েছিল, তা আমরা পূর্ত দফতরের সংশ্লিষ্ট দফতরকে দিয়ে দিয়েছি।” তাঁর মতে, ওই অংশটুকু ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট হলে রাস্তার আয়ু বাড়বে। তবে, সবার আগে দরকার রাস্তার দু’ধারে নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি করা।
অন্য দিকে, রাস্তার ওই অংশের দায়িত্বে আসা পূর্ত দফতরের এন এইচ ডিভিশনের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার অজিত সিংহ জানান, তাঁরা ওই রাস্তা দেখে এসেছেন। তাঁদের মতে, মূলত পিচে জল ঢুকেই রাস্তা ভেঙেছে। অজিতবাবু বলেন, “পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। রাস্তা সারানোর টেন্ডার ডাকা হয়েছে। টেন্ডার খোলা হবে আগামী সপ্তাহে। নিয়ম-মাফিক কিছু প্রক্রিয়া আছে। আশা করা যায়, কিছু দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।” |
পুরনো খবর: ব্যথাপথের মহানগর |