|
|
|
|
অগ্নিদেবের পুরোটাই গিমিক |
গত সোমবার অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়-য়ের সাক্ষাৎকার পড়ে
আনন্দplus দফতরে চিঠি পাঠালেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় |
বিভাগীয় সম্পাদক সমীপেষু,
আনন্দplus
গত সোমবার (২৬/০৮/২০১৩) অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের তথাকথিত ‘বিস্ফোরক’ সাক্ষাৎকারটি পড়লাম। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল আজকাল লাইমলাইটে আসার সব চেয়ে সহজ উপায় হল সাক্ষাৎকারে অন্যকে গালাগালি দাও। অগ্নিদেবও সেই রোগ থেকে বেরোতে পারেননি দেখলাম। উনি অন্যদের সম্পর্কে কী মত প্রকাশ করবেন, সেটা অবশ্য ওঁর নিজস্ব ব্যাপার। সে বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র কোনও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু কারও নামে মিথ্যে কথা বললে তার প্রতিবাদ তো করতেই হয়। আর অগ্নিদেবের মুখোশ খোলার জন্যই এই চিঠি।
উনি বলেছেন যে, আমি যখন তাঁর সঙ্গে ‘তিন কন্যা’ ছবি নিয়ে কথা বলছিলাম তখন আমি নিজে থেকে একজন সাংবাদিককে সেখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলাম। ঘটনাটা বলি তা হলে।
আমি সেই সাংবাদিককে একটা কফি শপে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলাম। সেদিনই অগ্নিদেবের সঙ্গে আমার মিটিংয়ের কথা ছিল। সেই জন্য দু’টো মিটিং এক জায়গায় করব বলে অগ্নিদেবকে আমি একই কফি শপে ডাকি। সেই সাংবাদিকের সঙ্গে মিটিং শেষ করে আমি অগ্নিদেবের সঙ্গে বসি। |
|
কোনও ভাবেই সেই সাংবাদিককে দাঁড় করিয়ে অগ্নিদেবের সঙ্গে মিটিং করার কোনও অভিপ্রায় ছিল না। এটা ওঁর প্রথম মিথ্যে কথা। তার পর ওঁর পরের মিথ্যে কথাগুলো জানাই। আমাকে উনি বলেন যে, পার্ক স্ট্রিট রেপ কেসের ওপর উনি একটা ছবি বানাচ্ছেন। আমি শুনে অভিনেত্রী হিসেবে যথেষ্ট এক্সাইটেড হই। উনি বলেন এই ছবিতে ঋতুপর্ণা একজন সাংবাদিক আর আমার চরিত্রটি নাকি দময়ন্তী সেন-য়ের আদলে আর পাওলি যৌনকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করবে।
আমি ওঁর কাছে ‘বাউন্ড স্ক্রিপ্ট’ চাই। উনি বলেন উনি ‘বাউন্ড’ স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করেন না। আমার বাউন্ড স্ক্রিপ্ট চাওয়ার কারণ, ‘চারুলতা ২০১১’র পোস্টারে যে রকম উত্তেজক দৃশ্য দেখানো হয়েছিল, তার সিকি ভাগও আমি সেই সিনেমায় দেখিনি।
এটা বুঝতে আমার অসুবিধা হয়নি অগ্নিদেব ‘পোস্টারে এক, সিনেমায় আর এক’ এটাকে স্ট্র্যাটেজি হিসেবেই ব্যবহার করেন। উনি আমাকে এটাও বলেন যে, ছবিতে একটা লেসবিয়ান অ্যাঙ্গলও আছে। আমি বুঝতে পারিনি পার্ক স্ট্রিট রেপের মতো সেনসিটিভ বিষয়ে লেসবিয়ানিজম কী করে আসবে। এমন নয় যে, লেসবিয়ান চরিত্রে অভিনয় করতে আমার কোনও ইনহিবিশন আছে। তবে এ রকম একটা সাবজেক্টে লেসবিয়ানিজম ঢোকানো যৌন সুড়সুড়ি ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি। |
|
বিস্তারিত... |
এর পর আমি লন্ডনে যাই। ওখানে গিয়ে শুনি পাওলি ছবিটা করছে না। এর মাঝে আমার বোন অজপা, যে আমার স্টাইলিং করে, তার সঙ্গে অগ্নিদেবের মিটিং হয়। বোনকে অগ্নিদেব যে সব ছবির রেফারেন্স মেল-য়ে পাঠায়, সেগুলোতে মুখ্য মহিলারা শুধুই অন্তর্বাস পরে আছে। অথবা চুমু খাচ্ছে একে অপরকে। একটা ছবিতে তো বাথটাবে একসঙ্গে স্নানের দৃশ্যও রয়েছে। বোনের মেল-এ ওই ছবিগুলো দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। আমি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি এক পুলিশ অফিসারের চরিত্রে যদি আমাকে অভিনয় করতে বলা হয়, তার অন্তর্বাসের ছবি কেন রেফারেন্স হিসেবে রাখবে।
তখনই বুঝি এ রকম সস্তা গিমিকের ওপরই ছবি বানান এই পরিচালক। পরে শুনেছিলাম উনি এই ছবির জন্য পার্নোকেও অ্যাপ্রোচ করেছিলেন, কিন্তু ও-ও করেনি। পরে পাওলি, পার্নো সবার সঙ্গেই কথা বলে বুঝেছিলাম অগ্নিদেবের কথা আর স্ক্রিপ্টের মধ্যে অসঙ্গতির জন্যই ওরা ছবিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। যে মানুষ এতগুলো মিথ্যে বলতে পারেন, যে মানুষ ধর্ষণের মতো সেনসিটিভ বিষয়কে যৌন সুড়সুড়ির প্রিজমের ভিতর থেকে দেখেন, তাঁর সম্বন্ধে এর বেশি না-ই বা বললাম। হ্যাঁ, আমাকে উনি কিছু এসএমএসও পাঠিয়েছিলেন, সেই এসএমএসগুলো আপনাদের দপ্তরে পাঠিয়ে দিলাম। প্রয়োজন হলে ব্যবহার করবেন। মানুষ অগ্নিদেবকে আর একটু ভাল করে মানুষ চিনবে তা হলে।
ইতি,
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
গল্ফ গার্ডেনস, কলকাতা |
|
|
|
|
|