শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন পুরসভা। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভার কাউন্সিলর,আধিকারিক এবং বরো অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর কর্তৃপক্ষ। এ দিন বেলা দু’টো পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী মোট ২৫ জন ডেঙ্গি রোগী রয়েছে বলে জানান উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসি প্রামাণিক। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জন এখনও বিভিন্ন নার্সিংহোম, হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি রয়েছেন। তবে স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া এই তথ্য মানতে নারাজ বিরোধী বাম কাউন্সিলরদের অনেকেই। তাঁরা জানান, সংখ্যাটা আরও বেশি। আক্রান্ত আরও কয়েক জনের নামও তুলে ধরেন তাঁরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিত। এই পরিস্থিতির জন্য পুরসভাকেও দায়ী করেছেন তাঁরা। সঠিক ভাবে আবর্জনা পরিষ্কার না করা, রাস্তাঘাটে জল জমে থাকায়, তা থেকেও মশার বাড়ছে বলে দাবি বিরোধীদের। ব্লিচিং, চুন না পাওয়ায় শহরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন।
ডেঙ্গির সংক্রমণ নিশ্চিত হতে ‘ম্যাক এলাইজা’ নামে যে রক্ত পরীক্ষা করতে হয় তা একমাত্র হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু অনেক নার্সিংহোম বাইরে থেকে পরীক্ষা করে নিয়ে আসতে বলছে বলেও অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি দেখছে না বলে জানান অনেক কাউন্সিলর। মেয়র জানান, পরিস্থিতি সামলাতে পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানান হবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদেরও সচেতন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি বরোতে স্বাস্থ্য শিবির করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে অসুস্থরা রক্ত পরীক্ষা করাতে পারবেন। সেই রিপোর্ট পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তবে সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য পুরসভা প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। আগামী বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে আরও একটি বৈঠক করা হবে বলে জানান তিনি। পুরসভারই একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরসভার ৪২, ৪৩, ৪৪ নম্বর ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা বেশি। ৩১ থেকে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডেও জ্বর নিয়ে অনেকেই ভুগছেন। শিলিগুড়ি পুরসভার মধ্যে থাকা জলপাইগুড়ি জেলার সংযোজিত ১৪ টি ওয়ার্ড কোন জেলার স্বাস্থ্য দফতর দেখবে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে বিষয়টি আলোচনা করে ঠিক করা হয়। শালুগাড়ার কাছে ডেমডেমা বস্তিতে ডেঙ্গির সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। জায়গাটি ডাবগ্রাম ১ এলাকায় মধ্যে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দিয়েছেন কর্মীর অভাব রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জলপাইগুড়ি জেলার রোগ বিশেষজ্ঞ নটরাজন, রাজগঞ্জের ব্লকের মেডিক্যাল অফিসার সুজিত দেবনাথ-সহ অনেকেই। পুরসভার মেডিক্যাল অফিসার সুনীল কুমার দাস জানান, মে মাস থেকে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতামূলক কাজ হচ্ছে। অথচ তার পরেও এই পরিস্থিতিতে সেই কাজ কতটা ঠিক ভাবে হয়েছে তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। |