শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ ছড়িয়েছে। পুরসভা এবং জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রেই জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি শহরের কেবল ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে সন্দেহভাজন ১৭ জন রোগী রয়েছেন। শহর এবং লাগোয়া এলাকা মিলিয়ে সন্দেহভাজন এমন অন্তত ৫০ জন রোগী রয়েছেন। এখন পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে অন্তত ১২ জনের ডেঙ্গি রোগ সংক্রমণের বিষয়টি পরীক্ষায় নিশ্চিত হতে পেরেছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে শহরের কোথায় কত জন আক্রান্ত, নার্সিংহোমে কত জন ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন সে ব্যাপারে স্পষ্ট তথ্য নেই পুরসভার কাছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পুর সভায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন কর্তৃপক্ষ। সেখানে জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর, বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের ডাকা হয়েছে। পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধানের তরফে তাদের চিঠি পাঠিয়ে বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে।
মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, ‘‘বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বাসিন্দারা ডেঙ্গি আক্রান্ত বলে খবর আসছে। পরিস্থিতি নিয়ে তাই উদ্বেগে রয়েছি। জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সঠিক পরিস্থিতি কী তা জানা জরুরি।” মেয়র অবশ্য জানিয়েছেন, যেখানে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর আসছে সেখানেই পুরসভার তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মশা মারতেও ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় জমা জলের জন্য মশার উপদ্রব বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। কারও বাড়ি চত্বরে কোথাও জল জমে থাকলে তা পরিষ্কার করতে বলা হচ্ছে। অন্যথায় প্রয়োজনে পুরসভার তরফে জরিমানা করার কথাও ভাবা হয়েছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে সে সব ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মেয়র। পাশাপাশি শহরের নার্সিংহোমগুলির তরফে পুর কর্তৃপক্ষকে ডেঙ্গি নিয়ে বিস্তারিত জানানো হচ্ছে না বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
শিলিগুড়ি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই ওই পদ ফাঁকা রয়েছে। ৪ নম্বর বরোর অধীনে ওই ওয়ার্ড। বরো চেয়ারম্যান সমীরণ সূত্রধর বলেন, “কত জন ডেঙ্গি আক্রান্ত জানা নেই। তবে জ্বরে অনেকেই অসুস্থ বলে তাঁর কাছে খবর এসেছে। ডেঙ্গি নিয়ে ওই ওয়ার্ডের কেউ কোনও নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন কি না সে বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি লাগোয়া রাজগঞ্জ ব্লকের ডেমডেমা বস্তিতে অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সেখানে ২৮ জন রোগী ডেঙ্গি আক্রান্ত সন্দেহে বিভিন্ন হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিন জনের রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। অন্য ছ’জনের ক্ষেত্রে এনএস-১ পরীক্ষার পর তাঁরা ডেঙ্গি আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সমস্যার মেটাতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাও করা হচ্ছে। ওই এলাকা বেতগাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীনে। সেখান থেকেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলা সদরের চেয়ে ওই এলাকা শিলিগুড়ি শহরের কাছে বলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় শিলিগুড়ি পুরসভার সাহায্য নিচ্ছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভার তরফে মশা মারার কামান সরবরাহ করা হয়েছে ওই এলাকার জন্য।
বুধবারও শিলিগুড়ি ভানুনগর এবং সেবক রোড এলাকার বাসিন্দা দুই বাসিন্দার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু থাকার বিষয়টি এনএস-১ পরীক্ষায় জানা গিয়েছে। তারা দু’ জনেই শিলিগুড়ির সেবক মোড় লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। পুরসভার কাউন্সিলরদের অনেকেই শহরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে কারও কাছেই সঠিক তথ্য নেই। পুরসভার সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ কাজল চন্দ বলেন, “শহরের অনেক ওয়ার্ডেই ডেঙ্গির সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে খবর মিলেছে। শহরে অন্তত ১৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
|
অসুস্থ যাত্রীর চিকিত্সায় প্রশিক্ষণ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অসুস্থ যাত্রীর জীবনরক্ষায় প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হল ট্যাক্সিচালকদের। সোমবার, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। রাজ্য সরকার এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন শহরের প্রায় চারশো ট্যাক্সিচালক। |
অসুস্থ যাত্রীর শুশ্রূষার প্রশিক্ষণ পেলেন ট্যাক্সিচালকেরা।—নিজস্ব চিত্র। |
উপস্থিত ছিলেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র, পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ট্যাক্সি মালিক ইউনিয়ন ও বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। যাত্রীরা আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে কী ভাবে তাঁদের প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া যাবে সেটাই শেখালেন ওই হাসপাতালের চিকিত্সকেরা। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ধাপে ধাপে শহরের সব ট্যাক্সিচালককেই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। |