গলব্লাডারে কোনও পাথর নেই। অথচ চিকিৎসক পুরনো এক রিপোর্টের ভিত্তিতে গলব্লাডারে পাথর রয়েছে বলে অস্ত্রোপচার করায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির উত্তরায়ণ উপনগরীর একটি নার্সিংহোমে ওই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগডোগরার জ্যোতিনগরে বাসিন্দা সুনীল কান্তি দে নামে ৪৮ বছরের ওই ব্যক্তির এ দিন অস্ত্রোপচার হয়েছিল। গত চার মাস ধরেই তিনি ওই নার্সংহোমে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তার আগে দক্ষিণ ভারতের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষায় জানতে পারেন গলব্লাডারে পাথর রয়েছে। রিপোর্টটি তিনি এই নার্সিংহোমের চিকিৎসককেও দেখান।
নার্সিংহোমের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক রুমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রোগীর লোকেরা যে রিপোর্ট দেখিয়েছিলেন তাতেই গলব্লাডারে পাথর রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসক তা দেখেছেন। রোগীর পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকের কথাও বলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
সুনীলবাবুর মেয়ে সঞ্চিতা দেবীর অভিযোগ, ওই রিপোর্টে যা বলা হয়েছিল এখন তার পরিস্থিতি কী। পাথরটি রয়েছে না কি বেরিয়ে গিয়েছে সে সব কোনও কিছুই খতিয়ে দেখেননি চিকিৎসক। উল্টে পেটের ব্যথার জন্য সোমবার নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হলে নার্সিংহোমের চিকিৎসক গলব্লাডারে অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন। এর পর রোগীর পরিবারের পছন্দ মতো চিকিৎসককে সেটির অস্ত্রোপচারের জন্য ঠিক করেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। সেই মতো এ দিন অস্ত্রোপচার করা হলেও গলব্লাডারে কোনও পাথর মেলেনি। সঞ্চিতাদেবী বলেন, ‘‘ভুল বুঝিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। গলব্লাডারে পাথর রয়েছে কি না আলট্রাসোনগ্রাফি করেই চিকিৎসক জানতে পারতেন। তা তাঁরা করেননি। বাইরে ওই অস্ত্রোপচার করতে যেখানে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা লাগে। এখানে তার জন্য ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। অথচ এখন গলব্লাডারে কোনও পাথরই নেই। সে কারণে ওই চিকিৎসক এবং নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।”
মাটিগাড়া থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীর পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোগীর পরিবারের দাবি, অস্ত্রোপচারের পর গলব্লাডারে পাথর নেই জানলে কথা বলার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে চাই। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল তাঁর সঙ্গে দেখা করা যাবে না। জোর করলেও ফল হয়নি। পরে জানানো হয় চিকিৎসক দুপুরে এসেছিলেন। কিন্তু সে সময় পরিবারের লোকদের কেউ ছিলেন না। এর পর সন্ধ্যায় নার্সিংহোমে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার জন্য ডাকা হয়। কেন এ ভাবে আগাম সব কিছু না দেখে অস্ত্রোপচার করা হল সেই প্রশ্ন তোলা হলেও চিকিৎসক সদুত্তর দেননি বলে অভিযোগ। অথচ চার মাস ধরেই এই নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাচ্ছেন সুনীলবাবু। তার প্রস্টেটে ক্যান্সার ধরা পড়েছে বলে প্রথমে জানানো হয়। সোমবার প্রচণ্ড পেট ব্যথা হলে তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। |