রাস্তার কাজ বন্ধ শিলিগুড়িতে, ব্যবসায়ীদের পর ক্ষুব্ধ মৃৎশিল্পীরাও
ঠিকাদাররা রাস্তা মেরামতের কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পরে এ বার অভিযোগ জানালেন শিলিগুড়ির কুমারটুলির শিল্পীরাও। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি কুমোরটুলির সম্পাদক সত্য পাল মেয়রের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, শিলিগুড়ির কুমোরটুলিতেও রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছিল। ঠিকাদাররা আন্দোলন করতে নেমে তা বন্ধ করে দিয়েছেন। অথচ সামনে ‘গণপতি’ পুজো। রাস্তা ঠিক না হলে বড় মূর্তি কুমোরটুলি থেকে বার করা মুশকিল হবে। কুমারটুলির সম্পাদক সত্য পাল বলেন, “আমাদের এলাকায় রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদারদের আন্দোলনের জেরে কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। ৩/৪ দিনের মধ্যে কাজ শুরু না হলে রাস্তা তৈরি হবে না। সামনে গণপতি পূজো রয়েছে। কী করে মূর্তি বের করা হবে তা নিয়ে সমস্যা রয়েছি।” দ্রুত রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরুর আবেদন জানান তিনি।
ঠিকাদার সংস্থার মুখপাত্র বিজন কুমার দাস বলেন, “সেখানে কালভার্ট তৈরির জন্য মাটি কাটা হয়েছিল। যে ঠিকাদার কাজ পেয়েছে তার আগের টাকাও বকেয়া রয়েছে। তাই তিনিও কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। বকেয়া না পেলে আমরা কাজ করছি না।”
এ দিকে গত ৬ দিন ধরে লাগাতার মেয়রের ঘরের সামনে বসে থাকা অনেকেরই অসুবিধা হচ্ছে। পুরসভার দোতলার করিডরে চলাফেরার রাস্তা আটকে এ ভাবে অবস্থান করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পুরসভার কর্মী আধিকারিকদের একাংশ। করিডরে এ ভাবে অবস্থান করায় মেয়র, ডেপুটি মেয়র, পুর কমিশনার, তাঁর আপ্তসহায়ক, পুরসভার সচিব, ফিনান্স অফিসার থেকে বড়বাবু কোনও ঘরেই যাতায়াত করা যাচ্ছে না। এমনকী প্রধানভবন থেকে জল সরবরাহ, বিল্ডিং বিভাগ বা ইউপিএ সেলে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। করিডরে চাদর বিছিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসে থাকছেন ঠিকাদাররা। কোনও রকমে তাদের গায়ের উপর দিয়ে যেতে চাইলেও জুতো খুলে চাদরের উপর দিয়ে যেতে হচ্ছে।
পুরসভায় ঠিকাদারদের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
একেই বাজেট পাস নিয়ে বিতর্কের জেরে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। তার পরেও ঠিকাদার সংগঠনের কর্মকর্তাদের একাংশ এ ভাবে সমস্যা তৈরি করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাতে পুরসভার কর্মী আধিকারিকেরাই সমস্যায় পড়েছেন তা নয়। পুরসভায় মেয়র, পুর কমিশনার,পুর সচিবদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দাদেরও। মঙ্গলবার শহরের ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে পুরসভায় বৈঠক শুরু মুখেও তাদের আন্দোলনের জেরে সমস্যা হয়। রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু না হলে পথ অবরোধ, বিধান মার্কেট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাস্তাঘাট থেকে নিকাশি তৈরির কোনও কাজ না হওয়ায় পুজোর মুখে শহরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ বাসিন্দারাও। বাসিন্দাদের অনেকের প্রশ্ন গত পূজোর পর থেকে কোন টাকা দেওয়া না হলেও কেন এতদিন তারা চাননি। এখন এই পরিস্থিতিতে কেন একেবারে কোমর বেঁধে আন্দোলনে নেমে পড়লেন? ঠিকাদার সংস্থার মুখপাত্র জানান, গত বছর পূজোর আগে অনেকে টাকা পেয়েছিলেন। তারপর থেকে আর কিছু পাওয়া যায়নি। এখন তাদের হাতেটাকা নেই। তাই কাজ করাও সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেস, তৃণমূল পরস্পরকে দোষারোপ করছে। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ, এই বোর্ডের সদস্যরা নিজেরাই মাসিক সভায় যোগ দিচ্ছেন না। তাই কাজ করতে পারছে না। কংগ্রেস পুর বোর্ডের কাউন্সিলরদের একাংশের প্রশ্ন মার্চের আগে পর্যন্ত তৃণমূল একসঙ্গে ছিল। তখন পূর্ত বিভাগের দায়িত্ব ছিল তৃণমূলের হাতেই। তখন কেন ঠিকাদারদের টাকা দেওয়া হয়নি? তা ছাড়া সে সময় পূর্ত বিভাগ ঠিক করেছিল ঠিকাদাররা জিনিস কিনে কাজ করবে পুরসভা টাকা দেবে। তা নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ঠিকাদাররাও।
পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.