ইউপিএ সরকার থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রকল্পে দিল্লির অর্থ পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ রাজ্য সরকারের। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ নিয়ে বারবার অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবারও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। এই পরিস্থিতিতে আটকে থাকা অর্থ পাওয়া যাবে বলে কেন্দ্রের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছেন বলে জানালেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী কমল নাথের সঙ্গে বৈঠকের পরে ফিরহাদ এ দিন দাবি করেন, “আটকে থাকা প্রকল্পের অর্থ দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কমল নাথ। এ ছাড়া, জেএনএনইউআরএম খাতে বেশ বড় মাপের অর্থ কেন্দ্রের ঘরে পড়ে রয়েছে। রাজ্য যাতে ওই অর্থ পায়, তার জন্য পরিকল্পনা জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কমল নাথ।” বিষয়টি নিয়ে দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে করে খুব দ্রুত একাধিক নতুন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্থিক মঞ্জুরি চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের এই আশ্বাস তাৎপর্যপূর্ণ বলে অনেকের ধারণা।
|
দিল্লির আলোচনাসভায় ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার। ছবি: প্রেম সিংহ |
মঙ্গলবার দিল্লিতে নগরোন্নয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের ভূমিকা ও যোগদান-শীর্ষক একটি আলোচনায় যোগ দিয়ে ফিরহাদ জানান, পশ্চিমবঙ্গেও এলাকার উন্নয়নে স্থানীয় মানুষের দাবি-দাওয়ার উপরে জোর দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। কোনও একটি এলাকার উন্নয়নে কী প্রয়োজন, তা জানার জন্য স্থানীয় মানুষদের নিয়ে প্রতি তিন মাস অন্তর বৈঠক করবেন সংশ্লিষ্ট বিধায়ক, পুরকর্তা ও প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। ফিরহাদ বলেন, “এতে সড়ক, পানীয় জলের মতো পরিকাঠামোগত কী ধরনের চাহিদা রয়েছে, তা উঠে আসবে। তার ভিত্তিতে পুরসভাগুলি তাদের ভবিষ্যৎ-পরিকল্পনা তৈরি করতে পারবে।” তিনি নিজেও ওই ধরনের বৈঠকগুলিতে থাকবেন বলে জানান ফিরহাদ।
বর্তমানে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের প্রথম পর্বের কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওই পরিকল্পনা আগামী দিনেও চালিয়ে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে একাধিক অনুরোধ জমা পড়েছে। দ্বিতীয় জেএনএনইউআরএম চালু হবে কি না, তা এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বিবেচনাধীন। তবে মন্ত্রক সূত্রের খবর, যে ভাবে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওই প্রকল্প চালু করার জন্য দাবি উঠেছে, তাতে আগামী দিনে দ্বিতীয় দফায় নতুন করে ওই প্রকল্প চালু করার বিষয়ে ইতিবাচক ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কেন্দ্র।
এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রকের কাছে ফিরহাদের প্রস্তাব, “রাজ্যের ধাঁচেই কোন এলাকায় কী প্রয়োজন, তা স্থানীয় জনগণ ও জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই এলাকাভিত্তিক প্রকল্প ঘোষণা করুক কেন্দ্র। এতে উন্নয়ন দ্রুত হবে।” |