দেশের তিন বিশ্বজয়ী তিরন্দাজ-কন্যা সোনার পদক উৎসর্গ করলেন মুম্বইয়ের গণধর্ষিতা চিত্রসাংবাদিককে।
পোল্যান্ড থেকে বিশ্বকাপ তিরন্দাজির ‘স্টেজ ফোর’-এ মেয়েদের দলগত সোনা জিতে দেশে ফিরেই দীপিকা কুমারী, বোম্বাইলা দেবী, রিমিল বুরিয়ুলি-রা জানতে পারেন ওই ন্যক্কারজনক ঘটনার কথা। হতবাক দীপিকা কোনওক্রমে শুধু বললেন, “আমাদের দেশের আইন কঠোর নয় বলেই দিল্লির পর মুম্বইয়ের মতো মেট্রো শহরেও এ রকম ভয়ঙ্কর ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। আমরা চাই ওই পাঁচ ধর্ষকের, সে কেউ নাবালকও হোক না কেন প্রত্যেকের যেন কঠোরতম শাস্তি হয়। এবং সেটাও খুব তাড়াতাড়ি। একমাত্র তা হলেই ধর্ষণের মতো জঘন্যতম সামাজিক অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব।”
দীপিকা ও সঙ্গী তিরন্দাজরা এর পর বললেন, “ওই মেয়েটিকে সমবেদনা জানানো ছাড়া আর কিছুই তো আমরা করতে পারি না। তাই আমরা বিশ্বকাপ থেকে জেতা সোনার মেডেল ওই চিত্রসাংবাদিক মেয়েকেই উৎসর্গ করছি।” |
তিন কন্যা: দেশে ফিরে রিমিল-দীপিকা-বোম্বাইলা। ছবি: পিটিআই |
কষ্টের পাশাপাশি দীপিকারা ক্ষুব্ধও। ‘স্টেজ-থ্রি’ আর ‘স্টেজ ফোর’ বিশ্বকাপের পরপর দু’টো আসর থেকে সোনা জিতে দেশে ফেরা সত্ত্বেও বিমানবন্দরে কোনও রকম অভ্যর্থনা না পেয়ে দীপিকা ও তাঁর সঙ্গী তিরন্দাজরা বললেন, “বিমানবন্দরে আমাদের কেউ তেমন ভাবে চিনতেই পারেনি! কোনও অভ্যর্থনা ছিল না আমাদের জন্য। পরপর দুটো বিশ্বকাপের আসর থেকে সোনা জেতার পর আমরা আশা করতেই পারি, অন্যান্য খেলার মতোই আমরা তিরন্দাজরাও দেশবাসীর সমাদর পাব। কিন্তু কোথায় কী!” রিমিল তো সাফ বলে দিলেন, “বিশ্বের অন্যতম সেরা শক্তিশালী তিরন্দাজ দল কোরিয়াকে হারিয়ে আমাদের সোনা জেতাটা নিশ্চয়ই ছোটখাটো ব্যাপার নয়?”
ভারতীয় তিরন্দাজ সংস্থার প্রেসিডেন্ট বিজয় কুমার মলহোত্র-র বাড়িতে এ দিন এক সংবর্ধনাতেও দীপিকাদের শুধু তাঁর হাত থেকে ফুলের স্তবক নিয়েই খুশি থাকতে হল। মলহোত্রর সাফাই, “আমরা এই তিরন্দাজদের বড় করে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ভেবে রেখেছি। সে জন্য আমাদের কেউ হয়তো বিমানবন্দরে যায়নি। তবে এটা বিরাট জয় তো বটেই।” তা হলে বিশ্বজয়ী তিরন্দাজ দলকে কত বড় আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে? এই প্রশ্নে অবশ্য মলহোত্র বলেন “সে ব্যাপারে ফেডারেশনের অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এখন বলা সম্ভব নয়।”
|