|
|
|
|
|
মুম্বই গণধর্ষণ-কাণ্ড |
তদন্তে মোড়, সন্দেহ
পুলিশ-দুষ্কৃতী আঁতাঁতের নিজস্ব প্রতিবেদন |
|
চিত্রসাংবাদিক গণধর্ষণে অভিযুক্ত পাঁচ যুবককে জেরা করে নিত্যনতুন তথ্য উঠে আসছে মুম্বই পুলিশের হাতে। তার মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি প্রকাশ্যে এল মঙ্গলবার। মূল অভিযুক্ত কাশিম মহম্মদ হাফিজ শেখ ওরফে কাশিম বাঙালির সঙ্গে পুলিশি আঁতাঁতের সূত্র মিলল প্রাথমিক তদন্তে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কাশিম মহম্মদের মোবাইল ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে পাওয়া গিয়েছে মুম্বইয়ের অপরাধ-দমন শাখার তৃতীয় ইউনিটের পুলিশ কনস্টেবল সালিম মুজাওয়ারের নাম। জুলাই মাসের শেষের দিক থেকে ঘটনার দিন পর্যন্ত প্রায় ৮০ বার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে কাশিম ও সালিমের। এমনকী ধর্ষণের পরেও, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এ কথা জানিয়ে ওই কনস্টেবল সে দিন রাতেই কাশিমকে ফোন করে সাবধান করে দেন বলে তদন্তকারী দলের দাবি।
আর এই কারণেই পুলিশের পক্ষে আরও কঠিন হয়ে যায় কাশিমের নাগাল পাওয়া। রবিবার অবশ্য সে ধরা পড়ে। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে কাশিম অপরাধ স্বীকারও করে নিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও তিনটি চুরি ও একটি ডাকাতির মামলা রয়েছে কাশিমের বিরুদ্ধে।
কনস্টেবল সালিম মুজাওয়ারের সঙ্গে কাশিমের যোগাযোগের খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই তা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধছে। অপরাধ-দমন শাখার তদন্তকারী অফিসাররা সালিমের সঙ্গে কাশিমের যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না এ নিয়ে।
কোনও কোনও অফিসার আবার সরাসরি সালিমের পক্ষ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যেই এক জন বলেছেন, “বৃহস্পতিবারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে সন্দেহভাজন হিসেবেই কাশিমকে ফোন করেছিলেন সালিম। এর আগে এক বার তিনিই গ্রেফতার করেছিলেন কাশিমকে। সেই সূত্রেই হয়তো ফোনে কথা হয়েছিল তাঁদের। এই ফোনগুলির কারণেই সালিমকে কাশিমের চর বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।”
সালিম মুজাওয়ার যে শাখায় কর্মরত ছিলেন, সেই শাখারই এক অফিসার বলেছেন, “ঘটনার পরে মুজাওয়ারই প্রথম কাশিমকে ফোন করেছিলেন। কাশিমকে পারেলের এন এম জোশি মার্গের অপরাধ-দমন শাখায় এসে যোগাযোগ করতে বলেছিলেন তিনি। এই ফোনটি পেয়েই হয়তো কাশিম সাবধান হয়ে গিয়েছিল এবং তার আগ্রিপাদার বাড়ি থেকে পালিয়েছিল সেই রাতেই।”
মুম্বই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সত্যনারায়ণ চৌধুরি অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “এই আঁতাঁতের বিষয়টি নিয়ে এখনই সরকারি ভাবে তদন্ত শুরু করা হবে না।”
গণধর্ষণ-কাণ্ডের তদন্ত চলছে পুরোদমে। মুম্বই পুলিশের অপরাধ-দমন শাখা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনও অভিযুক্ত যাতে পরে নিজেকে পুরুষত্বহীন বলে দাবি করতে না পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল পরীক্ষা এখনই করে ফেলা হবে। অভিযুক্তদের কেউই যে নাবালক নয়, তা-ও নিশ্চিত করেছে পুলিশ। মুম্বই পুলিশের কমিশনার সত্যপাল সিংহ বলেছেন, “পাঁচ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই অপরাধের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়িই চার্জশিট ফাইল করে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে মামলা শুরু হবে। অপরাধীদের চরমতম শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা হাল ছাড়ব না।”
অন্য দিকে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ধর্ষিতা তরুণীর অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি মানসিক ও শারীরিক ভাবে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কাউন্সেলিং চলছে। তিনি তাড়াতাড়িই বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন বলে চিকিৎসকেরা আশা করছেন।
|
পুরনো খবর: আগেও হয়তো ধর্ষণ করেছে ধৃতেরা: পুলিশ |
|
|
|
|
|