র‌্যাগিংয়ে কড়া শাস্তি,
জানালেন বেসু-র উপাচার্য
তারাতলার মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পরে শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি (বেসু)। আবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ। এবং আবার তার শিকার ভিন্ রাজ্যের এক পড়ুয়া।
লখনউ ও দেহরাদূন থেকে পড়তে এসে কয়েক দিন আগেই থানায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ জানিয়ে তারাতলার ওই কলেজ ছেড়ে নিজের নিজের রাজ্যে চলে গিয়েছেন দুই ছাত্র। বেসু-তে অত্যাচারিত ছাত্রটি অবশ্য চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি। বেসু সূত্রের খবর, আজ, সোমবার উপাচার্যকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট দেবে সেখানকার অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড বা র্যাগিং প্রতিরোধ বাহিনী।
বেসু-র র্যাগিং-রোগ বহু পুরনো। আগে সেখানে অনেক বার র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে কঠোর বিধিনিষেধ জারির পরে বেশ কিছু দিন ওই প্রতিষ্ঠানে এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। কিন্তু গত সপ্তাহে আবার এক নবাগতের উপরে অত্যাচার নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। ঠিক কী ঘটেছে?
বেসু সূত্রের খবর, সম্প্রতি ভিন্ রাজ্য থেকে সেখানকার মেটালার্জি বিভাগে পড়তে আসেন এক ছাত্র। তিনি বেসু-র ক্যাম্পাসের ভিতরেই আট নম্বর হস্টেলে থাকেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রটি ক্লাস করে ওই ক্যাম্পাসেরই একটি জেরক্স সেন্টারে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে সাত নম্বর হস্টেলের সামনে দিয়ে ফেরার পথেই তিনি দ্বিতীয় বর্ষের এক দল ছাত্রের খপ্পরে পড়েন বলে অভিযোগ। বেসু-কর্তৃপক্ষ জানান, দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রেরাও মেটালার্জি বিভাগেরই। অভিযোগ, সাত নম্বর হস্টেলের সামনে দিয়ে ফেরার সময়েই দ্বিতীয় বর্ষের পাঁচ জন পড়ুয়া ভিন্ রাজ্যের ছাত্রটিকে ডাকে।
বেসু-র রেজিস্ট্রার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রথম বর্ষের ছাত্রটি দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছেলেদের সঙ্গে যেতে রাজি হননি। কিন্তু তাঁকে এক প্রকার জোর করেই নিজেদের হস্টেলে নিয়ে যায় দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রেরা। ভিন্ রাজ্যের পড়ুয়াটি কর্তৃপক্ষকে জানান, সাত নম্বরের ওই ছাত্রেরা তাঁকে তাদের হস্টেলের একটি ঘরে ঢুকিয়ে গালাগালি দিতে থাকে। কান ধরে ওঠবোস করায়। তার পরে চলে মারধর। অত্যাচারে বিপর্যস্ত ছাত্রটি রীতিমতো ভয় পেয়ে যান। কাউকে কিছু না-জানিয়ে তিনি চুপচাপ নিজের হস্টেলে ফিরে যাচ্ছিলেন। পথে নিরাপত্তারক্ষীদের মুখোমুখি পড়ে যান। ছেলেটির বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে রক্ষীরা তাঁকে প্রশ্ন করে সব জেনে নেন। বেসু-কর্তৃপক্ষ জানান, ছাত্রটি এতটাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে, প্রথমে কিছু বলতে রাজি হননি। পরে তিনি পুরো বিষয়টি নিরাপত্তাকর্মীদের জানান।
নবাগতদের উপরে এক শ্রেণির পুরনো পড়ুয়ার অত্যাচার রুখতে র্যাগিং প্রতিরোধ বাহিনী সব সময়েই বেসু-র ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায় বলে ওই প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গিয়েছে। তা সত্ত্বেও ফের র্যাগিংয়ের ঘটনা কী ভাবে ঘটল, সেটাই কর্তৃপক্ষকে ভাবাচ্ছে। নিরাপত্তারক্ষীরা অবশ্য র্যাগিংয়ের অভিযোগ পেয়েই র্যাগিং প্রতিরোধ বাহিনীকে পুরো বিষয়টি জানান। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই লিখিত ভাবে সব জানানো হয় উপাচার্য অজয়কুমার রায় এবং রেজিস্ট্রার বিমানবাবুকেও। ওই বাহিনী প্রাথমিক তদন্ত করে শনিবারেই উপাচার্যকে একটি রিপোর্ট দিয়েছে। সোমবার তারা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করবে।
তারাতলার কলেজে র্যাগিংয়ের জেরে ভিন্ রাজ্যের দুই ছাত্র বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হওয়ায় কালি লেগেছিল কলকাতা-সহ বাংলার মুখে। বেসু-র ঘটনায় সেই কালির দাগ আরও গাঢ় হল। এই অবস্থায় র্যাগিং রুখতে তাঁরা যে বদ্ধপরিকর, বেসু-র উপাচার্য তা পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বেসু-তে কোনও রকম র্যাগিংকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তদন্তে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.