নাম না করেই লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে সওয়াল করলেন অরুণ জেটলি।
দিল্লিতে এক সম্মেলনে বিজেপি-র এই শীর্ষ নেতা বলেন, “এ বারের লোকসভা নির্বাচন হবে ব্যক্তিত্বের লড়াই। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে কে নেতৃত্ব দিতে পারবেন, তা আমার ও দলের কর্মীদের কাছে স্পষ্ট। আমার ধারণা দেশের মানুষের কাছেও বিষয়টি স্পষ্ট। মনমোহন সিংহের সরকার যে ভাবে সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে, সেই অবস্থায় এক জন শক্তিশালী ব্যক্তিত্বকেই দেশের নেতৃত্বে দেখতে চাইছেন মানুষ।” দলের মোদী-বিরোধী নেতাদের উপরে চাপ বাড়াতেই জেটলি তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “যত দ্রুত এই সিদ্ধান্ত নিতে পারব, তত তাড়াতাড়ি দেশকে সঙ্কটের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে আমরা উদ্যোগী হতে পারব।”
মোদীর হয়ে জেটলির এই ধরনের সওয়াল করা নিয়ে সুষমাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এর জবাব এড়িয়ে যান। দলের মোদী-বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, জেটলি প্রকাশ্যে এ ভাবে সওয়াল করে প্রচার কমিটির প্রধান মোদীর নেকনজরে থাকতে চাইছেন মাত্র। কারণ তিনি ভালই জানেন, চাপ দিলেও রাতারাতি মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করা হচ্ছে না। সঙ্ঘ ও বিজেপি-র শীর্ষ বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ঐকমত্যের অভাবেই এখনও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার জন্য দলের অন্দরে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব জেটলি। গোয়ায় কর্মসমিতির বৈঠকে যে দিন মোদীকে প্রচার কমিটির প্রধান ঘোষণা করা হয়, সে দিনও এক সভায় মোদীর সামনেই তিনি বলেছিলেন, “আজ অর্ধেক কাজ হল, আমার বিশ্বাস বাকি অর্ধেকও দ্রুত সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।” জেটলি মনে করেন, মনমোহন সিংহ এখন এক জন ব্যর্থতার প্রতীকমাত্র। তবু কংগ্রেস রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করতে ইতস্তত করছে। আর বিজেপি-র নিচু তলা ও শীর্ষ স্তরের সিংহভাগ নেতাই মনে করছেন, মোদীই একমাত্র মুখ। ফলে তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়া হোক। তাঁর যুক্তি, মানুষের সামনে মোদীর মতো একটা সুস্পষ্ট মুখ যদি থাকে, তবেই নতুন উদ্যমে দল ভোটযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারবে।
জেটলি অবশ্য ভাল করেই জানেন, দলে মোদীর সমর্থক যেমন রয়েছে, তাঁর বিরোধীও কম নয়। লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজের মতো শীর্ষ নেতারা এখনও মোদী-বিরোধিতায় অনড়। তাঁদের বার্তা দিতে ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের প্রসঙ্গও টেনে আনেন জেটলি। তিনি বলেন, “তাঁকে কারও পছন্দ হোক বা অপছন্দ, কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা যায় না।” |