যাত্রাভঙ্গে সঙ্ঘ-মুলায়ম আঁতাঁত দেখছে কংগ্রেস
যোধ্যাকে কেন্দ্র করে গোবলয়ে মেরুকরণের রাজনীতি এ বারে আছড়ে পড়তে চলেছে রাজধানী দিল্লিতেও। উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ সরকারের দাবি, গোটা দিনের চেষ্টায় আজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অযোধ্যা যাত্রা আটকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তাদের প্রায় সতেরোশো সমর্থক ও নেতাকে এ দিন গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। এই ব্যাপক ধরপাকড় ও অখিলেশ সরকারের দমননীতির প্রতিবাদেই আগামিকাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল বিক্ষোভ দেখাতে চলেছে দিল্লিতে।
সঙ্ঘ নেতারা মনে করছেন, যাত্রা রুখে দেওয়ায় ভোট মেরুকরণের অঙ্কে লাভই পাবে বিজেপি। আর কংগ্রেস-বিএসপি-র মতো দলগুলির সন্দেহ, ভোটের আগে মেরুকরণের রাজনীতি উস্কে দিতে মুলায়ম ও গেরুয়া শিবিরের মধ্যে যোগসাজশ তৈরি হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের লক্ষ্য হিন্দু ভোট। আর মুলায়ম সিংহদের নিশানা মুসলিম ভোট। নিজ-নিজ স্বার্থপূরণে তারা যৌথ কৌশল রচনা করেছে।
যাত্রা সফল করতে অযোধ্যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সমর্থকদের দৌড়ঝাঁপ। তৎপর পুলিশও। ছবি: পিটিআই
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যাত্রা ঠেকাতে আজ সকাল থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা অযোধ্যা। সরযূ নদীর দিকে যাবতীয় পথে তৈরি করা হয় ব্যারিকেড। জলপথেও যাতে কেউ আসতে না পারে, তার জন্য নৌকায় করেও পাহারা দেয় সশস্ত্র বাহিনী। এই কড়া বেষ্টনীর সঙ্গেই দিনভর লুকোচুরি চলে গেরুয়া শিবিরের। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অশোক সিঙ্ঘলকে লখনউ বিমানবন্দরেই আটকে দিয়ে তাঁকে দিল্লি ফেরত আসতে বলা হয়। কিন্তু তিনি আপত্তি করায় একটি গেস্ট হাউসে আটক করে রাখা হয় তাঁকে। মহন্ত নৃত্যগোপাল দাসকেও থামিয়ে দেওয়া হয় মাঝপথে। নিরাপত্তা কর্মীদের কালঘাম ছুটে যায়, হঠাৎই একটি আশ্রম থেকে প্রবীণ তোগাড়িয়া ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিয়ে বেরিয়ে আসতে দেখে। সরাসরি গোলা ঘাট পর্যন্ত পৌঁছে যান তিনি। গত কাল থেকেই তোগাড়িয়ার গতিবিধি নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিল অখিলেশের পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ। পরে অবশ্য তোগাড়িয়াকেও আটক করে পুলিশ। পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তোগাড়িয়া ঘোষণা করে দেন, “অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ এখন কেউ ঠেকাতে পারবে না।”
গোটা দিনে ১ হাজার ৬৯৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের দাবি। যাত্রা ঘিরে এই ব্যাপক প্রতিরোধে তাদের উপকারই হয়েছে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। তাদের মতে, হিন্দুত্বের আবেগকে ফের উস্কে দিয়ে গোবলয়ে মেরুকরণের যে রাজনীতি সঙ্ঘ পরিবার করতে চাইছে, অখিলেশ সরকার যাত্রা আটকে দেওয়ায় সে কাজে অনেকটাই সাফল্য এসেছে তাদের ঝুলিতে। সঙ্ঘের এক নেতা কবুল করেন, “মুলায়ম সিংহ যাত্রা আটকে সংখ্যালঘুদের রাজনীতি করবেন, তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এক সময় এই রামমন্দির আন্দোলনের মাধ্যমেই বিজেপি-র উত্থান হয়েছিল। অথচ বাজপেয়ী সরকার মন্দির নির্মাণে তেমন সচেষ্ট না হওয়ায় সেই ভোট হাতছাড়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে মেরুকরণ না হলে সেই হিন্দু ভোট বিজেপি-র ঝুলিতে ফিরবে না।”
অযোধ্যায় রাম মন্দিরের পূজারী আচার্য সত্যেন্দ্রও বলেন, “বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নিজেদের স্বার্থেই এই যাত্রা করছে। এটি আগাগোড়া রাজনৈতিক যাত্রা। মেরুকরণের রাজনীতি করেই ভোটে যাতে বিজেপি-র ফায়দা হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে তারা।” বিজেপি নেতারা কিন্তু এই যাত্রাকে প্রকাশ্যে ভোটের সঙ্গে যুক্ত না করারই পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই পথে হেঁটেই উমা ভারতী এ দিন বলেন, “এই যাত্রা ধর্মীয় যাত্রা। মুলায়ম সিংহ যাদবই এটাকে নিয়ে রাজনীতি করছেন। কিছু দিন আগে দুর্গাশক্তি নাগপালের ঘটনাকেও রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। কোনও ধর্মীয় আবেগকে এ ভাবে ধামাচাপা দেওয়া যায় না। আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্ন উঠলে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে। কিন্তু কোনও ধর্মীয় কমর্সূচি বন্ধ করা যায় না।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.