|
|
|
|
আগরতলা-সাব্রুম রেল প্রকল্পের কাজ থমকে, ক্ষোভ ত্রিপুরায়
আশিস বসু • আগরতলা |
রেলের ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১২ সালে। এখনও পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ২৮ শতাংশ!
আগরতলা থেকে রাজ্যের দক্ষিণে সাব্রুম পর্যন্ত রেল প্রকল্পের হাল এমনই। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আধিকারিকদের বক্তব্য, প্রকল্পের বাকি ৭২ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ করতে সময় লাগতে পারে আরও বছর পাঁচেক।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের চিফ অপারেশন ম্যানেজার (নির্মাণ) শ্রী গারুদের ব্যাখ্যা, ‘‘আর্থিক এবং জমি হস্তান্তরের সমস্যার জন্যই ওই প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে।’’ তিনি জানান, কেন্দ্রীয় বাজেটে লামডিং-বদরপুর-কুমারঘাট ব্রডগেজ প্রকল্প এবং আগরতলা-সাব্রুম প্রকল্পে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে, তাতে এখনই ওই সব কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, আগরতলা-সাব্রুম প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি এখনও পুরোপুরি রেলের হাতে আসেনি।
রেল সূত্রের খবর, লাইন বসানোর কাজ চলছে আগরতলা, বিশালগড়, বিশ্রামগঞ্জ, উদয়পুর, বিলোনিয়া থেকে সাব্রুম পর্যন্ত। প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ অনেকটা এগিয়েছে। তবে উদয়পুর, বিলোনিয়া, সাব্রুমে কাজ চলছে ধীর গতিতে। উদয়পুর থেকে সাব্রুম পর্যন্ত প্রকল্পের নক্শায় থাকা জমির অনেকটা বনাঞ্চল। সেখানে রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল তৃষ্ণা-ও। বনাঞ্চলের জমি রেলকে না-দেওয়ায় কাজ আটকে গিয়েছে। |
|
কাজ চলছে আগরতলা-সাব্রুম রেল প্রকল্পের। ত্রিপুরার বিশালগড়ে বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি। |
অর্ধশতাব্দী আগে অসমের লামডিং, শিলচর, জিরিবাম, কলকলিঘাট হয়ে ত্রিপুরার ধর্মনগর পর্যন্ত মিটার গেজ রেল লাইন বসানো হয়। কুমারঘাট হয়ে আগরতলা পর্যন্ত রেল যোগাযোগ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। বহু বছর ধরেই মিটার গেজকে ব্রডগেজ লাইনে বদলানোর দাবি তুলেছেন রাজ্যবাসী। আগরতলা থেকে সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবার সম্প্রসারণও চাইছেন তাঁরা। ২০০৫-এ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ত্রিপুরা সফরে এসে আগরতলা-সাব্রুম রেল প্রকল্পকে ‘জাতীয় প্রকল্প’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ১১৪ কিমি দৈর্ঘ্যের ওই রেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০০৬-০৭ সালে। তা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১২ সালে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের এক-তৃতীয়াংশ কাজ শেষ হয়েছে।
ওই প্রকল্প দ্রুত শেষ করার দাবিতে রাজ্যের বাম যুব-সংগঠন ডিওয়াইএফ, টিওয়াইএফ প্রতিনিধিরা দিল্লিতে কেন্দ্রীয় রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছেন। তাঁরা কথা বলেছেন রেলমন্ত্রীর সঙ্গেও। ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সভাপতি তাপস দত্তের বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক কারণেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রেল প্রকল্পগুলির কাজ ধীর গতিতে হচ্ছে।’’ তিনি জানান, জাতীয় রেল প্রকল্পের মধ্যে ১১টি রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই।
তাপসবাবু বলেন, “লামডিং-বদরপুর-আগরতলা পর্যন্ত ব্রডগেজ প্রকল্পের কাজ ২০০৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখনও পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৬৯ শতাংশ। ২০১৩-১৪ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে ওই প্রকল্পের জন্য ৩৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ
করা হয়েছে। আগরতলা-সাব্রুম প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা।” তাঁর অভিযোগ, কোঙ্কন রেল এবং কাশ্মীর উপত্যকায় রেলপথ নির্মাণে কেন্দ্রীয় সরকার প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করছে। ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি আশিস সাহা অবশ্য রাজ্যের রেল প্রকল্পগুলি রূপায়নে কেন্দ্রের ‘সদিচ্ছা’র অভাবের কথা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের অসহযোগিতার জন্য জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যা হচ্ছে। সে জন্যই প্রকল্পের কাজে দেরি হচ্ছে।’’ |
|
|
|
|
|