বিশ্বভারতী
শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত অধ্যাপকের শাস্তি
ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ ওঠার এক বছরের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে অভিযুক্ত প্রাক্তন ডিনকে ‘শাস্তি’ দিল বিশ্বভারতী। ওই অধ্যাপককে আগামী তিন বছর বিশ্বভারতীর সব রকমের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর পদোন্নতি এবং একটি ‘ইনক্রিমেন্ট’ আটকে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। রবিবার তিনি বলেন, “এই ধরনের অপরাধ বা আর্থিক দুর্নীতিএই সব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই মেনে নেবেন না। এ সব ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলা হবে।”
গত বছর অক্টোবর মাসে বিশ্বভারতীর গবেষণাপ্রার্থী তথা পল্লিশিক্ষা ভবনের কৃষি সম্প্রসারণ, অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের এক প্রাক্তন ছাত্রী ওই বিভাগেরই অধ্যাপক সিদ্ধার্থদেব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তোলেন। ওই সময় সিদ্ধার্থবাবু বিশ্বভারতীর ডিন ছিলেন। সিদ্ধার্থবাবুর গবেষণার কাজ করতে চেয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। ওই কাজেই ছাত্রীটি শ্রীনিকেতনে পল্লিশিক্ষা ভবনের অধ্যাপকের ঘরে এসেছিলেন। তখনই সিদ্ধার্থবাবু তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান ওই ছাত্রী। আর বিশ্বভারতীতে পড়বেন না জানিয়ে মণিপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে যান।
প্রাক্তন ছাত্রীর কাছ থেকে এমন গুরুতর অভিযোগ পেয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন। তড়িঘড়ি উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত ‘সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট কমিটি’কে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত অধ্যাপককে ডিনের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। মণিপুর থেকে ডেকে পাঠানো হয় অভিযোগকারিণীকে। কমিটির কাছে উপস্থিত হয়ে ছাত্রী সাক্ষ্য দেন। এর পরে কমিটি অভিযুক্ত অধ্যাপককে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পাশাপাশি সাক্ষ্য নেওয়া হয় কয়েক জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা ও ছাত্রছাত্রীর। বিশ্বভারতীর শীর্ষস্থানীয় এক আধিকারিক বলেন, “ওই কমিটি গত ডিসেম্বরেই তার রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। রিপোর্টে দেখা যায়, অভিযুক্ত অধ্যাপক কমিটির কাছে বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। এমনকী তিনি যে মিথ্যা কথাও বলেছেন, তা-ও ধরা পড়ে।”
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, ওই ছাত্রী তাঁর অভিযোগে জানান, কম্পিউটারে পেন ড্রাইভ ঢুকিয়ে তথ্য আদানপ্রদান করার সময় সিদ্ধার্থবাবু তাঁর শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কমিটির কাছে সিদ্ধার্থবাবু দাবি করেন, সে সময়ে তাঁর কম্পিউটারটি বন্ধ ছিল। যদিও সিদ্ধার্থবাবুর কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক কলকাতায় বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়ে জানা যায় তাঁর দাবি ঠিক নয়। কম্পিউটারটি তখন চালুই ছিল এবং পেন ড্রাইভও ব্যবহার করা হয়েছিল। বিশ্বভারতীর ওই আধিকারিক আরও বলেন, “কমিটি অভিযোগের সত্যতা জানিয়ে রিপোর্ট জমা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কী পদক্ষেপ করা হবে, তার জন্য বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন হয়। ওই কমিটিই সম্প্রতি সিদ্ধার্থবাবুর বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করে।” এ দিন অভিযোগকারিণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সিদ্ধার্থবাবুর বাড়িতে গেলে দেখা যায় ঘর অন্ধকার। পরে এসএমএস করা হলেও রাত পর্যন্ত উত্তর আসেনি।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.