ঘর পাল্টে ফের মুখোমুখি দুই হেভিওয়েট
নোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ শেষ। শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখন। পুরভোট নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও তুঙ্গে। দুবরাজপুর পুরভোটের ময়দানে যে কয়েকজন ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীর লড়াই দেখার জন্য পুরবাসী উদগ্রীব, তার অন্যতম সাত নম্বর ওয়ার্ড। এখানে লড়াইয়ের ময়দানে মুখোমুখি নুর মহম্মদ এবং শেখ নাজিরউদ্দিন। নুর মহম্মদ দুবরাজপুর পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে জেতা পরপর চার বারের কাউন্সিলর তথা তিন বারের কংগ্রেস উপ-পুরপ্রধান। যিনি সদ্য দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। অন্য দিকে, কংগ্রেস কাউন্সিল নাজিরউদ্দিন পর পর দু’বার নিজের ওয়ার্ড ধরে রাখতে পেরেছেন। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস ছেড়ে (পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান-সহ) তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিদায়ী কাউন্সিলরদের মধ্যে তিনিই একমাত্র দলবদল করেননি এবং এ বার পুরভোটে কংগ্রেসের আহ্বায়কও বটে।
সাত নম্বর ওয়ার্ডের দুই প্রার্থী শেখ নাজিরউদ্দিন ও নুর মহম্মদ।
একজন যদি শাসকদলের সমর্থন পান, তা হলে অন্য জনের মাথায় হাত রয়েছে কংগ্রেসের জেলা ও প্রদেশ নেতাদের। ফলে এলাকাবাসী মনে করছেন দুই ‘হেভিওয়েটে’র লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। দুই প্রার্থীও একই কথা মনে করছেন। এই দুই প্রার্থী যে, এই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছেন এমনটা নয়। উভয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন ৯৮ সালে। ওই সময় জয়ী হয়েছিলেন নুর। আসন্ন দুবরাজপুর পুরভোটে ফের একবার লড়াইয়ের আসরে মুখোমুখি দু’জন। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে এ বার সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করছেন তাঁরা। কারণ, সেবার নাজিরউদ্দিন ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। আর নুর ছিলেন কংগ্রেসের। পরে নাজিরউদ্দিন কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় গত দশটা বছর উভয়ের ছিলেন পাশাপাশি এবং পুর-বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্যও। এই দশ বছর একই রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করার পরে ফের জেতার জন্য ঝাঁপানো এবং একে অপরের বিরুদ্ধে ভোট প্রচার করাটা কী ভাবে করছেন দু’জনে? ওয়ার্ডের প্রায় সাড়ে ১৭০০ ভোটারের অধিকাংশই তাঁকে ভোট দেবেন এবং জেতাবেন বলে অশাবাদী নাজিরউদ্দিন। তাঁর কথায়, “এই ওয়ার্ডে উন্নয়নমূলক কাজ এবং মানুষের পাশে থাকার জন্যই পরপর দু’বার জিতেছি। এবারও জিতব। আর বিপক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, “উনি কখনওই এক জায়গায় দাঁড়াতে ভরসা পান না। কারণ সেভাবে উনি কখনও মানুষের জন্য কাজ করেননি। এমনকী তিন তিনবার উপ-পুরপ্রধানের পদ সামলালেও এলাকার তেমন কোনও উন্নতি করেননি। বরং নিজের আখের গুছিয়েছেন।”
পুরভোটে দেওয়াল লিখনে জোর তোড়জোড় সিপিএম ও তৃণমূলের। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে, নুর বলেন, “ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ইচ্ছে এবং দলের ইচ্ছে মেনেই আমি ওখানে দাঁড়িয়েছি। কারণ, উনি দু’বারের কাউন্সিলর হয়ে ওয়ার্ডের মানুষের প্রত্যাশা পূরন করে পারেননি।” আখের গোছানো অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চার বার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মানুষ আমাকে জিতিয়েছেন। তেমন অভিযোগ থাকলে নিশ্চই সেটা হত না।”
মূলত ৬০ শতাংশ শ্রমজীবী মানুষের বাস দুবরাজপুর পুরসভা এলাকায় (আধিকাংশই বিড়ি শ্রমিক)। এঁদের ভোটের উপরেই নির্ভর করছে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ভাগ্য। কী বলছেন এলাকার মানুষজন? তাঁদের কথায়, “নুর মহম্মদ পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়বেন না। তবে অসুবিধা একটাই ওয়ার্ডটা নতুন। মানুষের ‘ভাবাবেগ’ বুঝতে কিছুটা অসুবিধা হবে। শেখ নাজিরউদ্দিন দীর্ঘ দশ বছর ধরে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হওয়ার সুবাদে প্রায় সকলকেই ভালভাবে চেনেন। জানেন। সেই সুবিধাটা তিনি পাবেন।” কিন্তু এতদিন ধরে একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর থাকায় তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীও তৈরি হয়েছে। সেই বিরোধীদের কেমন ভাবে কাজে লাগাতে পারেন নুর মহম্মদ সেটা জেতায় বড় ভূমিকা হতে যাচ্ছে।
তবে এই ওয়ার্ডে লড়াইটা দ্বিমুখী কখনওই হবে না। কারণ, আসরে আছেন সিপিএম প্রার্থীও। আগের দু’বার ওই ওয়ার্ডে হারলেও এ বার দুই হেভিওয়েটের লড়াইয়ে ভোট কাটাকাটিতে তাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তে পারে বলে মনে করছেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.