পুরসভায় দলীয় মেয়র পারিষদকে অপসারণের ঘটনা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। দলের একাংশের দাবি, পুরসভা থেকে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের সমর্থন প্রত্যাহার করা উচিত। অপর একাংশ এখনই তা করতে নারাজ। তাঁদের মত, পুরো সময় বোর্ডে থেকে নিজেদের এলাকার কাজ গুছিয়ে নিন দলের কাউন্সিলররা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “আমি গোটা ঘটনা শুনেছি। ৩১ অগস্ট সব কাউন্সিলরকে ডেকে পাঠিয়েছি। তাঁদের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।” পুরসভা থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করা হবে কি না, সে প্রসঙ্গে প্রদীপবাবু এখনই কিছু মন্তব্য করেননি।
আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) কংগ্রেসের গোলাম সরওয়ারকে শুক্রবার পদ থেকে সরিয়ে দেন তৃণমূল থেকে নির্বাচিত মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়রের দাবি, প্রশাসনিক পদে থেকে তাঁর বিরুদ্ধে ওই মেয়র পারিষদ মামলা করেছেন ও বোর্ডের নানা বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন। যা নীতিবিরুদ্ধ। মেয়র পারিষদ গোলাম সরওয়ারের আবার দাবি, তিনি যা করেছেন, তা পুর এলাকার মানুষের স্বার্থেই। বেনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খোলার মধ্যে অনৈতিক বা নিয়মবিরুদ্ধ কিছু নেই বলেই তাঁর দাবি।
শুক্রবার কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছিল, এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই মেয়র পারষিদ যা করেছেন তা দলকে না জানিয়েই করেছেন। বিষয়টি পুরোপুরি প্রশাসনিক বিরোধ। কংগ্রেসের একটি সূত্রে খবর, এর পরেই দলের অন্দরে রীতিমতো জলঘোলা শুরু হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে দলেই কাজিয়া শুরু হয়েছে। দলের একাংশ বেশ কিছু কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে তৃণমূলের তাঁবেদারি করার অভিযোগ তুলে প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, এ ভাবে অপমান সহ্য করে বোর্ডে থাকা উচিত নয়। এখনই সমর্থন প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন তাঁরা। চিন্তিত প্রদেশ নেতৃত্ব তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছেন।
কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট পরিচালিত আসানসোল পুরসভায় মোট ৫০টি আসনের মধ্যে দু’জন বাম কাউন্সিলর এবং এক জন তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যু হওয়ায় বর্তমানে ৪৭ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। এর মধ্যে ১৮ জন বাম, ১৭ জন তৃণমূল ও ১২ জন কংগ্রেস কাউন্সিলর রয়েছেন। এই অবস্থায় কংগ্রেস সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে শাসকদল সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। মেয়র তাপসবাবু পুরবোর্ডের সঙ্কটের কথা উড়িয়ে দিলেও সে ক্ষেত্রে পুরোপুরি অন্য চিত্র তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। কংগ্রেস কাউন্সিলরদের পরিষদীয় দলনেতা শিবপ্রসাদ বর্মণ বলেন, “সোমবার আমরা সমস্ত কাউন্সিলর মিলে বৈঠকে বসব।” দলের প্রদেশ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তা-ই মেনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
|