গত ২৪ ঘন্টায় গঙ্গার জল না বাড়লেও জলস্তর চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এখনও মানিকচকে গঙ্গায় লাল সতর্কতা জারি রয়েছে। সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার (গঙ্গা) অমরেশ কুমার সিংহ জানান, দুইদিন গঙ্গা নদীর জল না বাড়লেও কাল, রবিবার থেকে ফের গঙ্গা নদীর জল বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে ভারী বৃষ্টির জন্য গঙ্গা জল বাড়বে। কতটা বাড়বে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। মানিকচকের গোপালপুরে ষষ্ট রিটায়ার্ড বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কামলতিপুর, উত্তর হুকুমতপুর, ইশ্বরটোলা তিনটি গ্রামের বেশিরভাগ বানভাসি মানুষ ভাঙা বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে দুর্গতদের অভিযোগ। নদী বাঁধ বেঙে মালদহে ২২টি গ্রাম ভেসে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের নারীকল্যাণ মন্ত্রী তথা ওই জেলার মানিকচক কেন্দ্রের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। |
শুক্রবার মহাকরণে তিনি জানান, বন্যার কারণে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। খাসখোলে প্রায় ৬০০ পরিবারের ঘর-বাড়ি ভেসে গিয়েছে। গোপালপুর, ভুতানি, কালিয়াচক অঞ্চল সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে সাবিত্রীদেবী জানান। তিনি বলেন, “নদী ভাঙনের কারণে যে সমস্ত পরিবারের বাড়ি ভেসে গিয়েছে সরকারি খাস জমিতে আবাসন তৈরি করে সেখানে তাদের স্থানান্তরিত করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন আগামী এক বছরের মধ্যে কমপক্ষে দু’হাজার পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”
জেলার পাঁচটি ব্লক হরিশ্চন্দ্রপুর-২, রতুয়া ১ ও ২, মানিকচক ও কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকে বন্যা পরিস্থিতির জন্য সমস্ত সরকারি আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার জানান, ত্রাণ বিলিতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই কারণে আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানিকচক, কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বন্যা কবলিত এলাকায় ৫০ হাজার মানুষ এখনও জলবন্দি হয়ে রয়েছে। |
জলমগ্ন মানিকচকের গোপালপুর। ছবি দু’টি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়। |
জেলাশাসক জানিয়েছেন, জলবন্দি গ্রাম থেকে বানভাসিদের উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নৌকার ব্যবস্থা করা হলেও বাড়ি ছেড়ে কেউ আসতে চাইছে না। দুর্গতদের বক্তব্য, এই সময় বাড়ি ছেড়ে আসলে বাড়ির জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাবে। তাছাড়া গরু ও মোষও রয়েছে।
বৈষ্ণবনগরের কংগ্রেস বিধায়ক ইশাখান চৌধুরী এই দিন অভিযোগ করে বলেছেন, “কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকেরই ৩০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত অথচ জেলা প্রশাসন যে ত্রাণ পাঠাচ্ছে তা অপ্রতুল। এলাকা বাছাই করে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।”
|