নদীর পাড় নির্মাণে নতুন প্রযুক্তি। শিলিগুড়ির কাছে শালবাড়ি এলাকায় পঞ্চনই নদীতে ওই নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাড় বাঁইয়ের কাজ করছে শুরু করল সেচ দফতর। নতুন প্রযুক্তির কাজ দেখতে শুক্রবার শিলিগুড়িতে আসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘পাইলট প্রজেক্ট’ শিলিগুড়িতেই বেছে নেওয়া হয়েছে। রাজীববাবু বলেন, “পাথর বালি দিয়ে পার বাধাঁইয়ের কাজের তুলনায় এই আধুনিক প্রযুক্তিতে কাজ করলে তাতে খরচ প্রায় ৩৩ শতাংশ কম হবে। পর্যায়ক্রমে সব নদীতেই এই ধরনের বাঁধ দেওয়া হবে।”
সেচ দফতর সূত্রের খবর, আধুনিক প্রযুক্তিতে ৫০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে পঞ্চনই নদীতে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে। |
কাজ তদারকিতে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
নতুন জিয়ো ব্যাগ পদ্ধতি এতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা দেখতে সিমেন্টের ব্যাগের মতই। কিন্তু তা তৈরি হয়েছে পলিস্টার, পলিপ্রপলিন ও পলিথিলাইনের ফাইবার দিয়ে। জলে এর কোন ক্ষতি হবে না বলে জানান সেচ দফতরের আধিকারিকেরা। পাশাপাশি এই বস্তাগুলি দেওয়ার আগে নিচে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ফাইবারের চাদরও। তারপরে বালি মাটি ভরা জিয়ো ব্যাগ ধাপে ধাপে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে কাজ চলছে পঞ্চনইতে।
এই প্রযুক্তিতে তৈরি বাঁধ আগামী ১০ বছরেও নষ্ট হবে না বলে জানান রাজীববাবু। তিনি বলেন, “একবার তৈরি হলে ১০ বছর তা থাকবে। কিন্তু বোল্ডার দিয়ে বাঁধ তৈরি করলে দেখা যায় তা অনেক সময় তুলে নিয়ে চলে যায়, পাথর ক্ষয়ে যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হবে না বলেই মনে করছি।” এই নির্মাণ কতটা টেকসই হবে তা দেখার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে নমুনা পাঠানো হবে। পাশাপাশি, এদিন আধিকারিকদের নিয়ে তিস্তা প্রকল্পের কাজের পর্যালোচনা করেন সেচমন্ত্রী।
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বন্যার খবর প্রতিটি জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য নদীতে যে টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল সে কাজ আগামী মাসের মধ্যে শুরু করা হবে বলে সেচমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি জানান, মূল নদী-সহ শাখা নদী গুলিতেও এই স্যাটেলাইট টাওয়ার বসানো হবে। প্রায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। যে কোনও জায়গায় নদীতে জল বাড়লে সে খবর ১৫ মিনিটের মধ্যে দফতরের কর্মীদের কাছে পৌঁছে যাবে। সেখান থেকে তা প্রশাসনিক স্তরে পৌঁছে দেওয়া হবে। এতে দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যাবে। ক্ষয়ক্ষতিও অনেক কম হবে। এর জন্য কর্মীদের আলাদা করে ৫০০টি মোবাইল দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
নদীগুলি যেখানে উৎপত্তি সেখানে থেকেও এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খবর রাখা হবে। এমনকি আবহাওয়ার খবরও পাওয়া যাবে এই ফ্লাড ওয়ার্নিং সিস্টেমের মাধ্যমে।
|