শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বাস্তুকার সপ্তর্ষি পাল সহ ঠিকাদার সংস্থার দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে আরও একটি আর্থিক দুর্নীতির মামলা আনল পুলিশ। শুক্রবার মালবাজারের বৈদ্যুতিক চুল্লির কাজে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। প্রায় তিন মাস আগে মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানের কাজে দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল এই বাস্তুকারকে। এ দিন ফের বৈদ্যুতিক চু্ল্লির কাজে অনিয়মের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে এইদিন এসজেডিএ এর দুর্নীতির নিয়ে দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। সিবিআই এর তদন্তের দাবি করেন তাঁরা।
অভিযোগ, কাজের বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রে নিউ ইন্ডিয়াকে নানা ভাবে সাহায্য করেছিলেন এসজেডিএ এর বাস্তুকার সপ্তর্ষি পাল। বিভিন্ন কাজের বরাত পাওয়ার কাজে ঠিকাদার সংস্থা গুলির যোগ্যতা আছে কি না তার সার্টিফিকেট দেন তিনি। তবে যে পরিমাণ কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছিল, সেই পরিমাণ কাজ নিউ ইন্ডিয়া সংস্থা কোনদিন করেনি বলে বলে পুলিশের দাবি। সেই সংস্থাকে যোগ্য দেখিয়ে কাজ পাইয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার ভিত্তিতেই এ দিন ফের গ্রেফতার করা হয়। কাজের জন্য নিউ ইন্ডিয়া অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে যোগ্য বলে তাঁদের টেন্ডারে যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই সংস্থা নিজে এখনও পর্যন্ত ৫০ লক্ষ টাকার বেশি কাজ করেনি। অভিযোগ, বিধি ভেঙে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বহু টাকা সপ্তর্ষি পালের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। শুধু তাঁর অ্যাকাউন্টে নয়, সপ্তর্ষি পালের পারিবারিক অ্যাকাউন্টেও টাকা জমা পড়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ।
অন্যদিকে বাগডোগরায় বৈদ্যুতিক চুল্লির কাজে দুর্নীতির অভিযোগে এ দিন নিউ ইন্ডিয়ার কর্ণধার অজয় মৈত্র ও তাপস বসুকে ফের গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা ইউরেকা ট্রেডার্সকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন। অভিযোগ, অজয়বাবু ও তাপসবাবু দরপত্রে বেশি টাকা লিখে তা জমা দেওয়ায় কাজটি পেয়ে যায় ইউরেকা সংস্থা পায়। ওই ঘটনায় মোটা টাকা লেনদেন হয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ। শুধু তাই নয় দাস এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সংস্থার নামে ভুয়ো দরপত্র জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। এ কাজেও সপ্তর্ষি পাল মদত দেন বলেও সন্দেহ পুলিশের।
এ দিন এই তিনজনকে এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বাসুনিয়া জানান, জামিনের আবেদন করা হলে তা খারিজ করে দেয় আদালত। ইতিমধ্যে মালবাজারের বৈদ্যুতিক চুল্লির কাজে গ্রেফতার করা হয়েছে এসজেডিএ এর বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকারকে। অন্যদিকে এই দিন এসজেডিএ এর দুর্নীতি নিয়ে দফতরের সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করেন দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। এই দুর্নীতি কান্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, কয়েকজন ঠিকাদার ও বাস্তুকারকে গ্রেফতার করে আসল দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। এ দিনের বিক্ষোভ অবস্থান থেকে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, প্রাক্তন চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ততা বর্তমানে মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমার, প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার ও তৃণমূল কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মার ভূমিকা নিয়েও। বামেদের দাবি, যাঁদের জেরা করা হয়েছে, তাঁদের কার, কী ভূমিকা তা প্রকাশ্যে জানানো হোক। |