নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই লাইন সংরক্ষণ করে তা পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে দিতে না পারলে দার্জিলিং রেলকে ‘এনডেনজার’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে রেলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ইউনেস্কো। আন্তর্জাতিক ওই সংস্থা যদি শেষ পর্যন্ত ওই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় তবে তা দেশের ভাবমূর্তির জন্য আদৌও ভাল হবে না বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। তাতে দেশের অন্যন্য ঐতিহ্য-স্থলের রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।
প্রথমে ২০১০ সালে পাগলাঝোরায়, এর পরের বছর তিনধরিয়ায় ভূমিকম্পের জেরে ৮৮ কিলোমিটার ওই লাইন এখন কার্যত তিন ভাগে বিভক্ত। তিনধারিয়ায় ও পাগলাঝোরায় ধস নামায় নিউজলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং এই গোটা রুটটির বদলে পর্যটকদের কথা ভেবে ভাগ ভাগ করে ট্রেন পরিষেবা চালু রাখতে বাধ্য হয়েছে রেল। মন্ত্রক জানিয়েছে, বর্তমানে দার্জিলিং ও ঘুমের মধ্যে ৪টি ট্রেন ছাড়াও দু’টি ট্রেন চালানো হয় দার্জিলিং এবং কার্শিয়াং-র মধ্যে। এ ছাড়া, জঙ্গল সাফারি নামে একটি ট্রেন চলছে শিলিগুড়ি এবং রংটং-এর মধ্যে। |
ধস নামার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় তিন বছর। কিন্তু ১৯৯৯ সাল থেকে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় থাকা ওই লাইনের মেরামতি কে করবে তা নিয়ে বিবাদ এখনও মিটিয়ে উঠতে পারেনি রাজ্যের পূর্ত দফতর ও কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক।
আর রেল মন্ত্রকের বক্তব্য, ওই লাইনটি ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর রয়েছে। তাই ওই সড়ক যত ক্ষণ না ঠিক হচ্ছে তত তক্ষণ রেল লাইন সারানোর কাজে হাত দিতে পারছে না রেল। অধীরবাবুর বক্তব্য, কেন্দ্র টাকা দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের পূর্ত দফতর কাজ শুরু করেনি।
এই পরিস্থিতিতে লাইনটির মেরামতি নিয়ে সব পক্ষ যে রকম গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থাটি তাতে ক্ষুব্ধ। ইউনেস্কো এখন তাই নিজেরাই ওই লাইন মেরামতিতে এগিয়ে এসেছে। সংস্থার পক্ষ থেকে রেল মন্ত্রককে দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইউনেস্কোর সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। সংস্থা সম্প্রতি চিঠি দিয়ে রেলকে জানিয়েছে, তারা ওই কাজের জন্য প্রযুক্তিগত সাহায্য দিতে প্রস্তুত। ওই কাজের জন্য প্রায় ৪০ কোটি টাকাও তারা মঞ্জুর করতে চলেছে। |