কে ধরবেন জেলার হাল? প্রশ্ন পুরুলিয়ায়
সন একটি। দাবিদার অন্তত ছয়।
কে বসবেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতির আসনে? ৩৮ আসনের পুরুলিয়া জেলা পরিষদে তৃণমূল একাই ৩১টি আসন পেয়েছে। তাঁদের মধ্যে সম্ভাব্য সভাধিপতি হিসেবে ছ’জনের নাম ঘুরছে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের মুখে। সেই জল্পনায় উঠে এসেছে দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর নামও। মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে তাঁকেই কি দল সভাধিপতি করে পিছিয়ে পড়া এই জেলার হাল ধরতে বলবে?
এখানে সভাধিপতির আসনটি এ বার ওবিসি সংরক্ষিত। ফলে জেলা নেতাদের মধ্যে মাহাতো সম্প্রদায়ের নেতারা ওই পদের জন্য এগিয়ে রয়েছেন। দল সূত্রে শোনা যাচ্ছে, সংরক্ষণের মাপকাঠিতে উঠে এসেছে বলরামপুরের ব্লক সভাপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী নিয়তি মাহাতো, শক্তিপদ মাহাতো, শিবানি মাহাতো, সুষেণ মাঝি, ও শ্যামসুন্দর মাহাতোর নাম। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নজর টানার রেষারেষি শুরু হয়ে গিয়েছে।
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, ২৬ অগস্ট দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় টাউন হলে জেলা পরিষদের বিজয়ী প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন। সেখানেই সভাধিপতির নাম ঘোষণা করা হবে। গোড়া থেকেই সভাধিপতির পদের জন্য পাল্লা ভারী নিয়তিদেবী। কারণ হিসেবে তাঁর অনুগামীরা দাবি করছেন, তাঁকে প্রার্থী করা নিয়ে মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু নিমরাজি ছিলেন। শেষে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে দল তাঁকে প্রার্থী করে। তবে দলের মানবাজার নেতৃত্বের একটা বড় অংশ সভাধিপতির জন্য মানবাজারের অন্য বিজয়ী প্রার্থী শ্যামসুন্দর মাহাতোর পক্ষেও দাবি তুলেছেন।
দৌড়ে পিছিয়ে নেই বলরামপুরের নেতা সৃষ্টিধর মাহাতোও। একসময়কার মাওবাদী উপদ্রুত এলাকা বলে পরিচিত এই বলরামপুরে তৃণমূল সরকারের গোড়াতেও মাওবাদীরা বেশ সক্রিয় ছিল। পরে এলাকায় মাওবাদীদের নিয়ন্ত্রণ করার মধ্যে দিয়েই তাঁর রাজনৈতিক উত্থান হয়। রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলরামপুরেরই বিধায়ক। সৃষ্টিধরের অনুগামীদের কথায়, দীর্ঘদিন সিপিএমের দখলে বলরামপুর থেকে শান্তিরামবাবুকে গত বিধানসভা নিবার্চনে জেতানোর পিছনে সৃষ্টিধর মাহাতোর ভূমিকা রয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্ব তাই সভাধিপতির নাম ঘোষণার সময় সৃষ্টিধরের নাম একবার অন্তত ভাববেন।
নাম উঠে এসেছে জয়পুরের দীর্ঘ দিনের বামবিরোধী নেতা শক্তিপদ মাহাতোর। কয়েক মাস আগে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। জেলা রাজনীতিতে তিনি ভদ্র ও সজ্জন মানুষ হিসেবে পরিচিত। গত বিধানসভা নিবার্চনে জয়পুর কেন্দ্রে কংগ্রেসকে টিকিট না দেওয়ায় তখন শক্তিপদবাবু নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়েছিলেন। ভোটপ্রাপ্তিতে তৃণমূল প্রার্থী তাঁর পিছনে চলে যান। তাই শক্তিপদবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ায়, সেখানে দলের ভিত মজবুত হয়েছে বলে দলের একাংশ দাবি করে তাঁকে ওই দৌড়ে রাখছেন। এ ছাড়া জঙ্গলমহলের দুই প্রতিনিধি আড়শার সুষেণ মাঝি ও বরাবাজারের শিবানি মাহাতোর নামও ঘোরাফেরা করছে। তাঁদের পক্ষেও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দাবি জানিয়েছেন দলের একাধিক জেলা নেতা। তাঁদের যুক্তি, দু’জনের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন, শিক্ষিতও বটে। সর্বোপরি তাঁরা জঙ্গলমহলের প্রতিনিধি।
এত কিছুর মধ্যেও রাজ্য নেতৃত্বের ভাবনায় রয়েছে, পিছিয়ে পড়া জেলার তকমা পাওয়া এই জেলায় উন্নয়নের গতি বাড়াতে হবে। তাই পুরুলিয়ায় এমন একজনকে নেতৃত্ব সভাধিপতির পদে বসাতে চান, যিনি আগামী পাঁচ বছরে উন্নয়নকেই পাখির চোখ করবেন। প্রায় চার দশক ধরে বামেদের দখলে থাকা এই জেলায় অনুন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে চাইছে দল। মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সেই চ্যলেঞ্জ কে নিতে পারবেন বা কার দক্ষতা রয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে, এও একটি বড় প্রশ্ন দলের অন্দরে। আবার ওই সভাধিপতি পদের দাবিদার যাঁরা, তাঁদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। তাই রাজনৈতিক পরিচ্ছন্নতাও একটা বড় মাপকাঠি হিসেবে থাকছে।
তৃণমূলের প্রায় জন্মলগ্ন থেকে জেলায় সংগঠনের কাজ করে আসা দলের জেলা কাযর্করী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক নকুল মাহাতোর খাস তালুক পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতিতে টানা ১৫ বছর বিরোধী দলনেতার পদে ছিলেন। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কাজকর্ম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সুজয়বাবু এ বার জেলা পরিষদের আসনে জিতলেও সংরক্ষণের ধাক্কায় তিনি অবশ্য সভাধিপতির লড়াইয়ে নেই। দল সূত্রে খবর, তিনি আবার সহ-সভাধিপতি পদের জন্যও আগ্রহী নন। এ বার তাঁর নজর লোকসভার দিকে। যদিও সুজয়বাবু বলছেন, “আমি দলের একজন সৈনিক। দল যা দায়িত্ব দেবে, তাই নিয়েই কাজ করব।”
দলের একাংশ আবার মনে করছেন, বিভিন্ন মহলের কোন্দল এড়াতে দলনেত্রী জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর কথাও সভাধিপতি হিসেবে ভাবতে পারেন। সিপিএম যে ভাবে বিলাসীবালা সহিসকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করিয়ে পুরুলিয়ায় জেলা পরিষদের সভাধিপতি করেছিল, ঠিক সে ভাবেই শান্তিরামবাবুকে হয়তো দল জেলা পরিষদের দায়িত্ব দিতে পারে। যদিও শান্তিরামবাবু বলছেন, “তা কি করে হয়? আমি জেলা পরিষদের সদস্যই নই। সভাধিপতি কে হবেন তা তো আমরা ঠিক করব না। রাজ্য নেতৃত্বই ঠিক করবেন।”
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হুগলির খানাকুলের পাতুল গ্রামের ধাড়াপাড়ায় ওই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম প্রতিমা সিংহ (৩৫)। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ করতে গেলে তারের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.