বেঙ্গালুরুর সাফ শিবিরে সারা দিন অপেক্ষায় ছিলেন রহিম নবি, সুব্রত পালরা।
মুম্বইতে ট্রেভর মর্গ্যানের ফুটবল আই পি এলের ট্রেনিং শিবিরে অনুশীলন করলেও সঞ্জু প্রধান, মেহরাজউদ্দিন, ইসফাক আমেদদের মন পড়ে ছিল কয়েক মাইল দূরের রিলায়্যান্স হাউসে।
প্রস্তাবিত ফুটবল আই পি এলের স্পনসরদের সঙ্গে বৈঠকে বসার তিন ঘণ্টা আগে আই লিগের ১৪ দলের ক্লাব জোটের বৈঠকে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হল। ফুটবলার ছাড়া বা নেওয়ার প্রশ্নে কী বলা হবে তা নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হল।
কিন্তু ফেডারেশন, তাদের স্পনসর আইএমজি-আর এবং ক্লাব জোটের বৈঠকে শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবিত ফুটবল আই পি এল নিয়ে কোনও প্রসঙ্গই উঠল না। উলটে আই লিগ নিয়েই নানা আলোচনা হল। ক্লাবের দাবি মেনে, লিগকে জনপ্রিয় করতে সামনের মরসুমে কী করা হবে তা নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেওয়া হল। দেখানো হল--হোর্ডিং, লিগের প্রোমো, রেডিও-টিভি সম্প্রচার এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কী ভাবে মার্কেটিং করা হবে। তৈরি হল দুটি কমিটি। মার্কেটিং নিয়ে ছয় জনের কমিটিতে রাখা হল ক্লাবের দুই প্রতিনিধিকে। ক্লাব জোট ঠিক করেছে, সেখানে থাকবেন পুণে ও সালগাওকরের প্রতিনিধি। রাতে আইএমজি রিলায়্যান্সের তরফ থেকে লিখিত যৌথ বিবৃতি পাঠানো হল সংবাদমাধ্যমের কাছে। বলা হল, “সভায় আলোচনা খুব সন্তোষজনক ও কার্যকর হয়েছে। আই লিগের সূচি নিয়ে ২৯ অগস্ট সভা হবে। লিগের মার্কেটিং নিয়ে সভা হবে ৩০ অগস্ট।” ব্যাস এইটুকুই। প্রস্তাবিত টুর্নামেন্ট নিয়ে একটি শব্দও নেই দেশের অন্যতম বড় কর্পোরেট সংস্থার নিরামিষ প্রেস রিলিজে।
সভা থেকে বেরিয়ে আসার পর মুম্বইতে ফোনে ধরা হলে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “ওঁরাও ফুটবলার ছাড়া নিয়ে কিছু বলেনি। আমরাও তুলিনি। ফলে আমাদের জোটের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকছে। আই লিগকে আমরা দেশের প্রথম টুর্নামেন্ট হিসাবে চেয়েছিলাম। সেটা ওঁরা মেনেছে।” আর মহমেডান সহ-সচিব রাজু আহমেদ বললেন, “আমরা কিছুটা হতাশই। ভেবেছিলাম আজই ফুটবলারদের নিয়ে ফয়সলা হয়ে যাবে। ওরা তো প্রসঙ্গই তুলল না।”
জাতীয় কোচ উইম কোভারম্যান্স বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর জাতীয় শিবিরে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আই লিগ না খেললে কোনও ফুটবলারকে তিনি জাতীয় দলের জন্য ভাবতে রাজি নন। দু’মাসের কোনও টুর্নামেন্ট দেখে তিনি ফুটবলার বাছবেন না। আই লিগই মাপকাঠি জাতীয় দলে ঢোকার।” নতুন টুর্নামেন্টের স্পনসররাও চাইছেন নবি-সুব্রত-গৌরমাঙ্গীরা খেলুক আই লিগে। তা সত্ত্বেও বহু প্রতীক্ষিত বৈঠকে কেন উঠল না ফুটবলারদের প্রসঙ্গ।
দু’রকম ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে।
এক) আই লিগকে মেরে যে প্রস্তাবিত ফুটবল আই পি এল তারা করতে চান না, সেটা প্রথমে ক্লাবগুলিকে বোঝাতে চান স্পনসররা।
দুই) ক্লাবদের খুশি করার পরই আসল তাসটা ফেলবেন আইএমজি-আর কর্তারা।
শোনা যাচ্ছে এই ফর্মুলা নাকি স্পনসরদের দিয়েছেন কয়েকজন ক্লাব কর্তাই।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, ক্লাব জোট যে ভাবে প্রস্তাবিত নতুন টুর্নামেন্টের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে তাতে তাদের খুশি না করলে ফুটবল আই পি এল করা কঠিন।
কিন্তু ক্লাবদের খুশি করলে কি নবি-সুব্রতদের ফেরানো যাবে আই লিগে? এক ক্লাব কর্তা বললেন, “আজকের সভার পর অন্তত মনে হচ্ছে, ওদের দু’মাসের আই পি এল খেলেই এ বছর শেষ করতে হবে। কোনও ক্লাব নেবে বলে মনে হয় না।” |