পাত্রসায়রের সিপিএম কর্মী লিয়াকত মিদ্যা খুনে অভিযুক্ত কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করার পরেই প্রতিবাদে নেমেছিল তৃণমূল। পাত্রসায়র থানার ওসি-র বদলির দাবিতে এক মাস আগে তৃণমূল কর্মীরা এলাকায় মিছিল করে থানায় স্মারকলিপি দেন। পাত্রসায়র থানার সেই ওসি মানবেন্দ্রনাথ পালকে বৃহস্পতিবার পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে দেওয়ার খবর জানাজানি হতেই পুলিশমহলে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার একই সঙ্গে জেলার আরও কয়েকজন ওসি-র রদবদল করার নির্দেশ দেন। তাঁদের অনেককে কয়েক বছরের মধ্যে পুরনো থানায় ফিরিয়ে দেওয়ায় ওই নির্দেশ নিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।
গত বছরের অগস্ট মাসে ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী লিয়াকত মিদ্যাকে পাত্রসায়র বাসস্ট্যান্ড থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়, নব পালের মতো প্রথম সারির নেতা-সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। সিপিএমের দাবি, হাইকোর্ট ওই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়ায় পাত্রসায়র থানার পুলিশ ৮ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করে। সিপিএমের পাত্রসায়র জোনাল সম্পাদক লালমোহন গোস্বামীর দাবি, “ওসি এতদিন অভিযুক্তদের ধরেনি। হাইকোর্টের নির্দেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করতেই তৃণমূলের রোষানলে পড়ে যান তিনি। এর পরেই তাঁকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে দেওয়ায় পুলিশ যে তৃণমূল নেতাদের কথায় চলছে তা আরও স্পষ্ট হয়ে গেল।” পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের বক্তব্য, “এটা রুটিন বদলি। এর পিছনে অন্য কোনও ব্যাপার নেই।” এই বদলির পিছনে তাঁদের দলের কোনও হাত নেই বলেই দাবি করেছেন তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ। তাঁর দাবি, “এটা তো প্রশাসনিক ব্যাপার। আমরা দলগত ভাবে কাউকে বদলির চাপ দিইনি।” মানবেন্দ্রবাবু অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
তাঁর সঙ্গেই ক্লোজ করা হয়েছে ইন্দাস থানার ওসি কৌশিক মিশ্রকে। শারীরিক অসুস্থতার জন্য ওসি-র পদ থেকে আগেই তিনি অব্যাহতি চেয়েছিলেন বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। তালড্যাংরা থানার ওসি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়কে ছাতনা এবং ছাতনা থানার ওসি দেবাশিস পাণ্ডাকে গঙ্গাজলঘাটি থানায় কয়েক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বার ওসি পদে ফিরিয়ে আনায় পুলিশ মহলেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “একই ব্যক্তিকে ওসি পদে ফিরিয়ে নিয়ে আসার এমন নজির সাম্প্রতিক অতীতে নেই বললেই চলে।” তবে পুলিশ সুপার দাবি করছেন, এই নির্দেশ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।
|