এই মেঘ-বৃষ্টি, এই ঝলমলে রোদ। বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার মতিগতি এমন থাকায় বৃষ্টিপাত অনেকটাই কমে যায় বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায়। তবে বৃষ্টি কমলেও কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধারে জলস্তর কমেনি। উল্টে ক’দিনের বৃষ্টির জল নেমে আসায় জলাধারের জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করে। এ দিন সকালে জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ৫০ হাজার কিউসেক থেকে কমিয়ে ৪০ হাজার করা হলেও দুপুর থেকে ফের জল ছাড়ার হার বাড়িয়ে ৫০ হাজার কিউসেক করা হয়। কংসাবতীর জলে এ দিনও বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়ক ও খাতড়া-আকখুটা রাস্তার কিছু অংশ জলমগ্ন থাকে। ফলে দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় যান চলাচল এ দিনও স্বাভাবিক হয়নি।
খাতড়ার মহকুমাশাসক শুভেন্দু বসু বলেন, “মুকুটমণিপুর জলাধারের জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। তাই জলাধার থেকে ৫০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। জলস্তর কিছুটা নেমে গেলে জল ছাড়ার পরিমাণ কমানো হবে বলে সেচ দফতর জানিয়েছে। কংসাবতী সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (১) বিশ্বনাথ কুমার বলেন, “পুরুলিয়া জেলায় বুধবারও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই জল মুকুটমণিপুর জলাধারে ব্যাপক পরিমাণে ঢোকে। জলাধারে এ দিন দুপুর পর্যন্ত জলস্তর ছিল এ বছরের রেকর্ড পরিমাণ ৪৩৮.২ ফুট। তাই জল ছাড়ার হার একই রাখতে হয়েছে।” |
খাতড়ার মহকুমাশাসক জানান, কজওয়ের উপর দিয়ে জল বইতে থাকায় খাতড়া থেকে আকখুটা যাওয়ার রাস্তা বন্ধ রয়েছে। বারিকুলের অমৃতপাল গ্রামে ভৈরববাঁকি নদীর জল কজওয়ের সামান্য উপর দিয়ে বইছে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। তবে জল কমলেই বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে যান চলাচল করবে। বুধবার দুপুর থেকে সিমলাপালের আনন্দপুরে শিলাবতী নদীর জল সেতুর উপর দিয়ে বইতে থাকলেও এ দিন অবশ্য জল নেমে গিয়েছে। বৃষ্টি কমতেই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জনজীবন। গত তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টির জেরে কার্যত গৃহবন্দি থাকার পরে এ দিন অবশ্য রাস্তায় বেরিয়েছিলেন আমজনতা। দক্ষিণ বাঁকুড়ার কিছু এলাকা বাদে জেলার সর্বত্র জনজীবন ছিল স্বাভাবিক।
পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে পুরুলিয়াতেও। গত তিন-চার দিনের টানা বৃষ্টিতে মানবাজার, বোরো, বরাবাজার, বান্দোয়ান প্রভৃতি ব্লক এলাকায় খাল-বিলে জলস্ফীতি দেখা গিয়েছিল। এর জেরে বরাবাজার-মানবাজার রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। জল সরতেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়। খাল উপচানো জলের স্রোত কমে যাওয়ায় বোরো থানার দিঘি গ্রামে যাওয়ার রাস্তাও খুলে গিয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে তীব্র স্রোতে জল বাইতে থাকায় বুধবার পড়ুয়ারা স্কুল যেতে পারেনি। বৃহস্পতিবার থেকে এলাকায় দোকানপাটও খোলে।
|