মাঠে লিওনেল মেসি নেই। চোট পেয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। ম্যাচ দ্বিতীয় অর্ধে ঢুকে পড়েছে এবং বার্সেলোনা এক গোলে হারছে...।
বার্সেলোনাকে তা হলে বাঁচাবে কে?
বুধবার গভীর রাতে বিশ্ব জুড়ে বার্সা সমর্থকদের কিন্তু কোটি টাকার এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া হয়ে গেল।
বাঁচাবেন নেইমার!
যিনি ম্যাচে হারের মুখ থেকে বার্সেলোনাকে বাঁচালেনই না, স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম লেগের পর টিমকে সুবিধেজনক অবস্থায় পৌঁছেও দিলেন। ক্লাবের জার্সিতে তাঁর প্রথম গোল। কিন্তু সেটা যে এমন মহানাটকীয় চিত্রনাট্যের হাত ধরে আসবে, স্বয়ং নেইমারও আন্দাজ করেছিলেন কি?
উপরোক্ত উদাহরণ আদতে ছিল বাস্তবের রুক্ষ জমি। মাদ্রিদের মাটিতে যেখানে বুধবার রাতে আছড়ে পড়তে হল বার্সেলোনার মতো হেভিওয়েট টিমকে। একে অ্যাওয়ে ম্যাচ। তার উপর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের জার্সি পরেই পুরনো টিমের বিরুদ্ধে দাভিদ ভিয়া যে ‘প্রতিশোধ’ নিতে নেমে পড়বেন, বোঝা যায়নি।
মাত্র বারো মিনিটে গোল খেয়ে যায় বার্সেলোনা। ভিয়ার গোলে। এবং প্রথমার্ধে গোল শোধ তো করা যায়ইনি, উল্টে চরম ধাক্কা খেয়ে বসে বার্সা। বাঁ উরুতে চোট লেগে ম্যাচ থেকে ছিটকে যান মেসি। জানা যায়, তাঁর পক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে নামা আর সম্ভব হবে না। যে খবর মোটামুটি বজ্রাঘাত সম হয়ে আছড়ে পড়ে বার্সা শিবিরে। এলএমটেন-ই নেই, বাঁচাবে কে? জেতানো তো দূরের ব্যাপার। |
এবং নেইমার শুধু বাঁচালেনই না, কপাল ভাল থাকলে টিমকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতেন। শেষ দিকে নেইমার-ফাব্রেগাস যুগলবন্দিটা ঠিকঠাক কাজ করলে। বার্সার প্রথম এগারোয় এখনও জায়গা পাননি ‘ওয়ান্ডার কিড’। পরিবর্ত হিসেবে নামতে হচ্ছে। কিন্তু বুধবার তাঁর দুর্ধর্ষ হেড থেকে গোল কোচ জেরার্ডো মার্টিনোকে স্টার্টিং লাইন আপ নিয়ে যে নতুন করে ভাবাবে, সন্দেহ নেই। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে দানি আলভেজের মাইনাস থেকে দুরন্ত হেডে গোল করে যান নেইমার। যা দেখে বার্সা টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ রীতিমতো মুগ্ধ। ব্রাজিলীয় মহাতারকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
সেস ফাব্রেগাস যেমন। ম্যাচের পরপরই বলে ফেলেছেন, “নেইমারের গোলটা বিশ্বমানের ছিল। আশা করছি ক্লাবের হয়ে আরও গোল করবে ও।” ক্লাবের স্পোর্টিং ডিরেক্টর আন্তোনিও জুবিজারেত্তা আবার বলেছেন, “অবাক লাগছে গোলটা দেখে। মজার হচ্ছে নেইমারের প্রথম বার্সেলোনা গোলটা হেড থেকে এল। নেইমারের প্রতিভা নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই। প্রথম এগারোয় নিজেকে অপরিহার্য করে তোলার জন্য ওকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হবে।” আর নেইমার নিজে কী বলছেন? অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে সুপার কাপের প্রথম লেগ ড্র রাখায় সুবিধেজনক পরিস্থিতিতে থেকে গেল বার্সেলোনা। কারণ, দ্বিতীয় লেগ এ বার বার্সেলোনার ঘরের মাঠে। আর কঠিন প্রতিপক্ষ সামলে বার্সার জার্সিতে প্রথম গোল স্মরণীয় করে রাখতে পেরে নেইমার বলছেন, “আমি খুব খুশি। ম্যাচটা খুবই কঠিন ছিল। কারণ প্রতিপক্ষের মোটামুটি সব প্লেয়ারই বিশ্বমানের।”
কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, বুধবার রাতে বার্সেলোনা যদি নতুন পরিত্রাতার সন্ধান পেয়ে থাকে, তা হলে দুশ্চিন্তার মেঘও জমা হয়ে থাকল। লিওনেল মেসি চোটে মোটামুটি জর্জরিত। পিঠের ব্যথার সঙ্গে এ বার যোগ হল উরুর চোট। সেটা কতটা গুরুতর? কোচ মার্টিনো বলছেন, “ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেই বুঝতে পারব চোট কতটা গুরুতর।”
|