পুজোর পর নতুন অ্যানিকেতের কাজ শুরুর আশ্বাস সেচমন্ত্রীর
পুজোর পরই কংসাবতীর নতুন অ্যানিকেতের কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মেদিনীপুরে এসে তিনি বলেন, “এই অ্যানিকেত নিয়ে বিগত দিনে অনেক সমালোচনা হয়েছে। আমরা ভাল করে কাজ করার চেষ্টা করছি। সেই মতো পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। নতুন অ্যানিকেত তৈরি হবে। বর্ষার জন্য কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। পুজোর পর পুরোদমে কাজ শুরু হবে।”
মোহনপুরের কাছে কংসাবতী নদীর উপর অ্যানিকেত বাঁধ তৈরি হয়েছিল ১৪৩ বছর আগে। সেচ ছাড়াও পানীয় এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জল ও বন্যা প্রতিরোধের মতো দিকগুলোর কথা ভেবেই ইংরেজরা এই বাঁধ তৈরি করেছিল। ছ’বছর আগে, ২০০৭ সালের বন্যায় তা ভেঙে যায়। আগে বহু জলের স্রোত সামলেছে এই অ্যানিকেত। বহু বন্যা প্রতিরোধ করেছে। ভেঙে যাওয়ার পর কয়েকবার সংস্কার হয়েছে। তবে, পরবর্তীকালে আবার ভেঙেছে। কেন? সেচ দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, অ্যানিকেত ভাঙার জন্য মূলত দু’টি কারণ দায়ী। প্রথমত, কংসাবতী নদীর আশপাশ থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা। বালি তুলতে তুলতে তা একেবারে অ্যানিকেতের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। ফলে, পাথরের অ্যানিকেতের ইটের তৈরি ভিত আর মজবুত ছিল না। দ্বিতীয়ত, ২০০৬ সালে অ্যানিকেতের উপর সিমেন্টের আস্তরণ তৈরি করা হয়। পরে সেটি রাস্তায় পরিণত হয়। মানুষের যাতায়াত তো বটেই, বালি বোঝাই লরিও চলতে শুরু করে সেই রাস্তা দিয়ে। সব মিলিয়ে, জলের স্রোত সামলাতে পারলেও উপরের এত চাপ সামলানোর ক্ষমতা ছিল না অ্যানিকেতের।
মেদিনীপুরে কংসাবতীর অ্যানিকেত বাঁধ। —ফাইল ছবি।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, কংসাবতী অ্যানিকেতটি লম্বায় ৫১৬.১ মিটার। তার মধ্যে উঁচু অংশটি ৩৬৮.৮০ মিটার (হাই ওয়্যার)। তার থেকে নীচের অংশটি ৯১.৪৪ মিটার (লো ওয়্যার)। তারপর রয়েছে বে শাটার ৩৭.৫৭ মিটারের আর স্টনিস গেট ১৮.২৯ মিটার। ২০০৭ সালের বন্যায় লো ওয়্যারটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। হাই ওয়্যারের ১৫০ মিটারও ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারকাজ হয়। কিন্তু, ২০০৮ সালে ফের বন্যায় এই বাঁধের ৩৫ মিটার ভেঙে যায়। তখন আবার ২ কোটি টাকা ব্যয়ে তা মেরামত করা হয়। কংসাবতীর এই অ্যানিকেত থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চারটি ব্লকের ৮০ হাজার একর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। মেদিনীপুর সদর, কেশপুর ও ডেবরা ব্লকের বন্যা প্রতিরোধও করা যায়। অ্যানিকেতে জল না থাকলে অসময়ে সেচের জল পাবে না খড়্গপুর-২ ও ডেবরা, পিংলা এবং পাঁশকুড়া ব্লকের বেশ কিছুটা এলাকা।
পরিস্থিতি দেখে আর সংস্কার নয়, নতুন করে অ্যানিকেত তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরনো অ্যানিকেত রেখেই নতুন অ্যানিকেত তৈরি হবে। দু’দফায় নতুন অ্যানিকেত তৈরি করা হবে। তারই সঙ্গে মেরামত করা হবে ভেঙে যাওয়া স্টনিস গেট। সেচ দফতর সূত্রে খবর, এ বার অ্যানিকেত তৈরি হবে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে। যার নাম শিট পাইল। স্টিলের পাত দিয়ে দু’দিক ঘেরা থাকবে। মাঝে থাকবে পাথর। আর তার উপরে সিমেন্টের গাঁথনি। ফলে শুধু পাথর থাকলে যেমন সামান্য পরিমাণ জল বেরিয়ে যেত এবং অ্যানিকেতের ক্ষতি হত, এর ফলে সেই ঘটনা ঘটবে না। ভাঙারও কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। পুরনো অ্যানিকেত থেকে কিছুটা এগিয়ে তা তৈরি করা হবে। শুধু কংসাবতীর অ্যানিকেত নয়, বুধবার মেদিনীপুরে এসে সেচমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজও যত দ্রুত সম্ভব শুরু করার চেষ্টা চলছে। এ জন্য নতুন করে ২ হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.