গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রধান পদ পাওয়া নিয়ে বোর্ড গঠনের আগে আরামবাগে তৃণমূলের মধ্যে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গিয়েছিল, বোর্ড গঠনের পরেও তা থামার লক্ষণ নেই। বুধবার রাতে তিরোল পঞ্চায়েত এলাকার কড়ুইতে তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে আহত দু’পক্ষের তিন জনকে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই রাতেই গোঘাটের বদনগঞ্জ ও শ্যামবাজারেও গোষ্ঠী-সংঘর্ষে কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশ সত্ত্বেও দলের একাংশ সংযত হচ্ছে না। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা ভাঙার চেষ্টা করলেই পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করতে বলেছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিরোল পঞ্চায়েতে প্রধান পদের জন্য তৃণমূল দলীয় ভাবে মনোনীত করে কড়ুই গ্রামের বাসিন্দা, দলের দীর্ঘদিনের নেতা আব্দুস সুকুরকে। কিন্তু গত শুক্রবার বোর্ড গঠনের সময়ে দলীয় সদস্যদের একাংশ তাঁর বিপক্ষে ভোট দেন। হেরে যান আব্দুস সুকুর। প্রধান হন শেখ কোচন। বুধবার রাতে আব্দুস সুকুরের ভাইপো-সহ পাঁচ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক দলীয় কার্যালয় থেকে ফিরছিলেন। সেই সময়ে দলেরই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর কয়েক জন তাঁদের উপরে লাঠি নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মারামারি হয়।
আব্দুস সুকুরের অভিযোগ, “প্রধান পদে আমাকে হারিয়ে দেওয়ার পর থেকে দলেরই কিছু ছেলে আমাদের মারার হুমকি দিচ্ছিল। বুধবার রাতে দলের কর্মী শেখ ফজলুলের নেতৃত্বে কয়েক জন আমার ভাইপো-সহ পাঁচ জনকে পেটায়।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শেখ ফজলুল। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “প্রধান পদে হেরে যাওয়ার পর থেকে ওঁরাই আমাদের হুমকি দিচ্ছিলেন। আমার উপরে হামলার চেষ্টা করায় বুধবার শুধু বাধা দেওয়া হয়।”
গোঘাটের বদনগঞ্জের ঘটনাও প্রায় একই রকম। বদনগঞ্জ-২ পঞ্চায়েতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রধান পদে মনোনীত করা হয়েছিল হরেরাম রায়কে। কিন্তু ভোটে তাঁকে হারিয়ে প্রধান হন ওই দলেরই আনন্দ বেজ। তার জেরে বুধবার হরেরামবাবুর অনুগামীদের আনন্দবাবুর অনুগামীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। অভিযোগ উড়িয়ে আনন্দবাবুর দাবি, “হরেরারমের লোকেরাই তাঁদের মারতে গেলে প্রতিবাদ করা হয়েছে।”
শ্যামবাজারে ভাঙচুর করা হয় তৃণমূলের একটি কার্যালয়। এ ক্ষেত্রেও নাম জড়িয়েছে দলেরই একটি গোষ্ঠীর। গোলমালের জেরে পুড়শুড়ার চিলাডাঙ্গি পঞ্চায়েতের তালা বৃহস্পতিবারেও খোলা হয়নি। তৃণণূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অশান্তি হয় ভাঙ্গামোড়া পঞ্চায়েত এলাকাতেও। |