আর ঢিলেমি নয়, দলকে কড়া বার্তা দিলেন রাহুল
পলক্ষ ছিল পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট ও লোকসভার প্রচারে নামার আগে কংগ্রেসের রাজ্যওয়াড়ি মুখপাত্রদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। দলীয় প্রচারে মুখপাত্ররা কী ভাবে ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করবেন, তা বুঝে নিতেই তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল দিল্লিতে। সেই প্রশিক্ষণ শিবিরেই দলীয় নেতাদের উদ্দেশে রীতিমতো কড়া সতর্কতা জারি করলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সাফ বলে দিলেন, “দলে গয়ংগচ্ছ ব্যবস্থা আর চলবে না। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে পারফরম্যান্স বিচার করা হবে নেতাদের। যাঁরা কংগ্রেসের জন্য রোজ ঘাম-রক্ত ঝরাচ্ছেন, তাঁদের গুরুত্ব দেবে হাইকম্যান্ড। আর যাঁদের জন্য দলের ক্ষতি হচ্ছে, তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে পিছনের সারিতে।”
লোকসভা ভোটের আর ন’মাসও বাকি নেই। এই অবস্থায় রাহুলের এই কড়া বার্তার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে বলে জানিয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল। তাঁরা বলছেন, সুনির্দিষ্ট কারণ আছে বলেই রাহুল এমন মন্তব্য করেছেন। তাঁর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইদানীং কংগ্রেসের কিছু নেতা সংবাদমাধ্যমে এমন সব বিবৃতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন যার সঙ্গে দলের মত ও পথের মিল নেই। আবার কিছু নেতা পদ পেয়েও কোনও কাজ করছেন না। বা এমন কাজ করছেন, যাতে দলের ক্ষতি হচ্ছে।
সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে রাহুল বলেছেন, বিজেপিতে কোনও বিষয় নিয়ে নেতা কর্মীদের ওপর মত চাপিয়ে দেওয়া হয়। সেটাই সবাই মিলে বলেন। কিন্তু কংগ্রেসের মধ্যে বিতর্কের সুযোগ রয়েছে। নেতারা মত প্রকাশের সুযোগ পান। কিন্তু সেটা আবার কংগ্রেসের সমস্যাও বটে। কারণ, অভ্যন্তরীণ বিতর্ক ও ব্যক্তিগত মতামত সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশ করে দেন নেতাদের একাংশ। এ কথা বলার পরেই রাহুল আজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দলের মিডিয়া বিভাগের সাধারণ সম্পাদক নির্দেশ না দিলে কোনও নেতা যেন কোনও সংবাদমাধ্যমের সামনে মত না প্রকাশ করেন, বা টিভি চ্যানেলে গিয়ে বিতর্কে অংশ না নেন।
তবে এক দিকে এই রাশ টানার পাশাপাশি বিজেপিকে মোক্ষম জবাব দিতে মুখপাত্রদের আরও ক্ষিপ্র হওয়ার পরামর্শও দেন রাহুল। তাঁর মতে, কোনও একটি বিষয় হাতে পেলেই বিজেপি নেতারা হইচই শুরু করে দেন। আর কংগ্রেস জবাব দিতে সময় নেয়। মজা করে রাহুল এ-ও বলেন, কংগ্রেসের অনেক নেতাই পাঁচ বছরে এক বার জবাব দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু এটা হল একবিংশ শতাব্দী। এখন নিয়মিত জবাব দিতে হবে।
রাহুলের বার্তা পরিষ্কার, কোনও বিষয় নিয়ে দলের মধ্যে বিতর্কে দল সমৃদ্ধ হবে ঠিকই, কিন্তু সেই সমস্ত মতামত কেন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পাবে? দলের একটাই অবস্থান হওয়া প্রয়োজন। যে কারণে আজ তিনি স্পষ্ট করে দেন, কোনও বিষয়ে দলীয় অবস্থান স্থির করে দেবে হাইকম্যান্ড। সে জন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, পরিষদীয় দলনেতা এবং মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে সব সময় ই-মেল খোলা রাখতে হবে। হাইকম্যান্ডের বার্তা প্রদেশ নেতৃত্ব পাঠিয়ে দেবেন জেলা স্তরে। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে কর্মশালায় আজ উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। তিনি জানান, দলের প্রচারের ব্যাপারে হাইকম্যান্ডের এই নির্দেশ রাজ্যে সব স্তরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় কর্মশালা হবে। পরেও আসানসোল ও শিলিগুড়িতেও দুটি কর্মশালা হবে।
আজকের কর্মশালায় দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর এবং মণীশ তিওয়ারি সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন। এক সময় টুইট করে তারুর নিজেই বিতর্কে ফেঁসেছিলেন। কংগ্রেসের কর্মশালায় আজ প্রশিক্ষণ দিতে এসে তারুর গোড়াতে সেই প্রসঙ্গই আজ উত্থাপন করেন। বলেন, ওই ঘটনা শিক্ষা দিয়েছে যে, সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখার আগে সতর্ক থাকতে হবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.