|
|
|
|
মোদী-সমর্থনের জাল ভিডিও নিয়ে ক্ষুব্ধ বচ্চন
নিজস্ব প্রতিবেদন |
তাঁকে নিয়ে ইউ টিউবে জাল ভিডিও আপলোড করার জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিলেন অমিতাভ বচ্চন। যে ভিডিও নিয়ে অমিতাভের তীব্র আপত্তি, তাতে দেখানো হয়েছে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য প্রচার করছেন বলিউডের এই প্রবীণ অভিনেতা। বিতর্কের জেরে সেই ভিডিও অবশ্য ইউ টিউব থেকে পরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটারে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অমিতাভ। বুধবার রাত থেকে জাল ভিডিও নিয়ে এই বিতর্ক শুরু হওয়ার পরে আজ রাজকোটের উৎপল জীবরজনী নামে এক সুরকার অমিতাভ এবং মোদীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তিনিই ইউ টিউবে ওই ভিডিওটি আপলোড করেছিলেন। কিন্তু ভিডিওটি তিনি নিজে তৈরি করেননি। উৎপল বলেছেন, “এই ভিডিওর সঙ্গে আমি সরাসরি যুক্ত নই। হোয়াটসঅ্যাপে ওই ভিডিও কেউ আমায় পাঠিয়েছিল। ভিডিওটা ভাল লাগল বলে ইউ টিউবে আপলোড করেছিলাম।”
অমিতাভের দাবি, ২০০৭ সালে একটি পত্রিকার জন্য করা ভিডিওয় ভারতবর্ষ সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলেন তিনি। সেটা থেকে তাঁর কণ্ঠস্বর ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে একটি জাল ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। তাতে তিনি যা যা বলেছিলেন, সেগুলোকে ভুল ভাবে, খারাপ ভাবে কিছু দৃশ্যের সঙ্গে মিশিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। যেটা থেকে মনে হচ্ছে, ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সমর্থন করছেন অমিতাভ। বলিউড তারকার মন্তব্য: “আমাকে নিয়ে এই বেআইনি কাজকর্মে আমি ভয়ঙ্কর বিরক্ত। ভীষণ রাগ হচ্ছে।” এই মন্তব্যের পাশাপাশি টুইটারে ২০০৭ সালের সেই ভিডিও এবং এখনকার জাল ভিডিও দু’টিই আপলোড করে তিনি লিখেছেন, ‘এটা আপলোড করলাম। আপনারা দেখুন এবং এর নিন্দা করুন।’
|
|
অমিতাভ গুজরাতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। মুখ্যমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে অমিতাভের এমনিতে সৌজন্যেরই সম্পর্ক। গুজরাতে তৃতীয় বার ভোটে জয়লাভের পরে অমিতাভই প্রথমে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। সৌজন্য বজায় রেখে এই ভিডিও-বিতর্কে বচ্চনের পাশে দাঁড়িয়েছেন মোদী। টুইটারে তিনিও বলেছেন: ‘ওই জাল ভিডিও নির্মাতার অমিতাভজির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ বচ্চন বলেছেন, গোটা বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। ওই ভিডিও কে তৈরি করেছে, তা খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর ডিজিটাল টিমকে। তাঁকে খুঁজে পেলে, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বুধবার রাত থেকে জাল ভিডিও-বিতর্ক শুরু হলেও বিষয়টি নিয়ে তলে তলে জলঘোলা হচ্ছিল কিন্তু বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই। রাজনৈতিক দলগুলি পরস্পরের বিরুদ্ধে সাইবার অস্ত্র ব্যবহারের যে সংস্কৃতি শুরু করেছে, সেই পথ অনুসরণ করেই ওই ভিডিও নিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হয়েছিলেন কংগ্রেসের সমর্থকরা। ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে তাঁরা মন্তব্য করছিলেন, অমিতাভ মোদীর পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। যাতে অমিতাভ চরম অস্বস্তিতে পড়েন। হয়েছেও তাই। অমিতাভ গোটা বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। অমিতাভের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত মন্তব্য করে মোদীও তড়িঘড়ি নিজেকে বিতর্ক থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছেন।
রাজকোটের সুরকার উৎপল আপলোডের দায় স্বীকার করেও বলেছেন, “১৫ অগস্ট ভিডিওটি পেয়েছিলাম। আপলোড করার পরে যখন শুনলাম, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এবং অমিতাভ বচ্চন এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন, আমি ওটা সরিয়ে দিয়েছি। দু’জনের কাছে ক্ষমাও চেয়েছি।”
একই সঙ্গে উৎপলের বক্তব্য, তিনি বিজেপি বা কংগ্রেস কোনও দলের সঙ্গেই রাজনৈতিক ভাবে যুক্ত নন। কিন্তু একটি সূত্রের দাবি, উৎপল বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাই ভিডিও বিতর্কে বিজেপির ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই ভিডিও তৈরি করে সাইবার দুনিয়ায় মোদীকে নিয়ে প্রচারের কৌশল যে এ ভাবে মাঠে মারা যাবে, তা হয়তো বুঝতে পারেনি বিজেপি। |
|
|
|
|
|