সারি সারি নিষ্প্রাণ দেহ ঘুম কেড়েছে পৃথিবীর। ইরাকের স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে সিরিয়া।
ঢোক গিলে সিরিয়া সরকার দাবি করছে, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হয়নি। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল চাইছে, রাষ্ট্রপুঞ্জ গোটা ব্যাপারটা অবিলম্বে তদন্ত করে দেখুক। ফ্রান্স সরাসরি এ কথাও বলেছে যে, রাসায়নিকের ব্যবহার প্রমাণ হলে সিরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগে বাধ্য হবে ন্যাটো।
প্রায় ২৫ বছর আগে ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে কুর্দ জনগোষ্ঠীর হাজারো সদস্যকে হত্যা করেছিল সাদ্দাম-হুসেনের সমর্থকেরা। সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের অদূরে অগুনতি শিশু-সহ সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর আর হাড় হিম করে দেওয়া ছবি বিশ্ববাসীর মনে সেই স্মৃতিই জাগিয়ে দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্রোহীদের দমন করতে আসাদ সরকারও রাসায়নিক অস্ত্রের সাহায্য নিয়েছে। বিষাক্ত গ্যাসেই প্রাণ গিয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আইন কোনও ভাবেই লঙ্ঘিত হওয়া উচিত নয়।
আজ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসাদ-বাহিনীর এক উচ্চপদস্থ অফিসার অবশ্য বলেন, বিদ্রোহীদের দমন করতে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছিল ঠিকই। |
কিন্তু কোনও রকম রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। সিরিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা সাজানো ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।
কিন্তু এত সহজে বিষয়টা ছেড়ে দিতে রাজি নয় আন্তর্জাতিক মহল। দামাস্কাস সংলগ্ন ওই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষজ্ঞ দলকে অনুমতি দেওয়ার জন্য আসাদ সরকারের উপরে চাপ তৈরি করছে পশ্চিমী দেশগুলি। ফ্রান্সের বিদেশমন্ত্রী লরেন্ট ফ্যাবিয়াস জানিয়েছেন, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের সত্যতা প্রমাণিত হলে সিরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগে বাধ্য হবে ন্যাটো। জার্মানির বিদেশমন্ত্রী গুইডো ওয়েস্টারওয়েল-ও বলেছেন, “আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার পরিণাম ভয়ঙ্কর হতে পারে।”
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অবশ্য এখনই আসাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে চাইছেন না। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রশাসনের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আসাদ সরকারকে হটিয়েও আখেরে লাভ হবে না। কারণ আসাদ-বাহিনী সরে যাওয়ার পর ক্ষমতার রাশ টেনে ধরবে এমন কোনও বিদ্রোহী দল এখনও সিরিয়ায় নেই। হোয়াইট হাউস আপাতত রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে ঘটনার তদন্তের আর্জি জানিয়েছে। এ দিন রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে এক জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। ব্যক্তিগত ভাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন-ও ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। |