জেএনএনইউআরএম বা নেহরু প্রকল্পে বাস কিনেও অনেকে ব্যাঙ্কঋণ মেটাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ব্যাঙ্কের কিস্তি না-মেটালে এ ওই প্রকল্পের বাস আটক করা হবে।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বুধবার মহাকরণে জানান, আগামী শনিবারেই বাস আটকের অভিযান শুরু হবে। তিনি বলেন, “সরকারকে এক পয়সাও দেব না। বাসও চালাব না। অথচ রাস্তা জুড়ে বাস ফেলে রেখে দেব। দিনের পর দিন এটা চলতে পারে না। শনিবারের পর থেকে বাস তুলে নেওয়ার কাজ শুরু হবে।”
ওই সব বাস তুলে নিয়ে সরকার কি নিজেরা চালাবে?
উত্তর দেননি পরিবহণমন্ত্রী। তবে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, জুনের শেষে ঋণ বাবদ বকেয়ার পরিমাণ ৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ওই বাসগুলি নিয়ে কী করা হবে, ধন্দে পড়েছে সরকারই।
বাস আটক করার ব্যাপারে মন্ত্রীর ঘোষণাকে অবশ্য দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন বাস-মালিকদের সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সি অফ বাস সিন্ডিকেটসের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সরকার বাস তুলে নিলে নেবে। আমরা তো গত এক বছরে পরিবহণমন্ত্রীকে এই বিষয়ে আট বার চিঠি দিয়েছি। কেন আমরা কিস্তির টাকা দিতে পারছি না, তা-ও জানিয়েছি। মন্ত্রীর মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীকেও। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।”
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০০৯ সালে ১৫ বছরের পুরনো বাস চালানো বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় বাসের আকাল মেটাতে নেহরু প্রকল্পের আওতায় ৫১২টি বাস কিনেছিল পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম। ওই বাসগুলি কিনতে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিল সরকারই। প্রতিটি বাসের দাম পড়েছিল ২০ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে ৪৯৬টি বাস বেসরকারি মালিকদের হাতে দেয় পরিবহণ দফতর। ঠিক হয়, মালিকেরা ১০ লক্ষের মতো টাকা শোধ করবে। কিস্তি পড়বে মাসিক ২২ হাজার টাকা। কিন্তু বছর দেড়েক কিস্তির টাকা দেওয়ার পরেই অনেকেই তা বন্ধ করে দেন।
মালিকদের যুক্তি, বাস চালিয়ে লাভ হচ্ছে না। কারণ, ডিজেলের দাম যে-হারে বেড়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া বাড়েনি। তাই বাস চালিয়ে আয় হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বাস-মালিকদের সঙ্গে বহু বার বৈঠক করেছে পরিবহণ দফতর। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি।
|