বড়জোড়া থেকে দুর্লভপুর, প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তা যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে ঝুঁকি এড়াতে যাত্রীদের নামিয়ে বাসকে খানাখন্দ পার করাচ্ছেন চালকেরা। অবিলম্বে রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে বুধবার থেকে ওই রাস্তায় টানা ধর্মঘটে নামল বাঁকুড়া জেলা মিনিবাস মালিক সমিতি। মঙ্গলবার থেকেই রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে বলে পূর্ত (সড়ক) দফতর দাবি করলেও মিনিবাস মালিক সমিতির সহ-সম্পাদক শিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাস্তার গর্ত ভরাট করতে কয়েক গাড়ি বোল্ডার ফেলা হয়েছে মাত্র। এর বেশি আর কিছুই হচ্ছে না।
বড়জোড়া-দুর্লভপুর রাস্তাটি মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প (এমটিপিএস)-সহ বড়জোড়া-মেজিয়া শিল্পাঞ্চলের ক্ষেত্রে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই এই রাস্তা বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। দিনে প্রায় ২৭টি মিনিবাস এবং আরও কয়েকটি বাস চলে এই রুটে। ধর্মঘটের জেরে এ দিন কোনও বাসই এই রাস্তায় না চলায় দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে তাঁদের ছোট গাড়িতে যাতায়াত করতে হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বেহাল হওয়ায় সমস্যার মধ্যে পড়ছেন বাসচালক থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই। তাই এ দিন নাকাল হয়েও নিত্যযাত্রীরা বাস মালিকদের রাস্তা সারাইয়ের দাবিকে সমর্থন করছেন।
বড়জোড়ার বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ, অভয় বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে এখন যাতায়াত করা বেশ বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। প্রায়ই গাড়ির চাকা গর্তে পড়ে ফেঁসে যাচ্ছে। দু’মাস ধরে এই অবস্থা। অথচ প্রশাসনের কোনও নজর নেই।” তবে, রাস্তার এই হালের জন্য শিল্পাঞ্চলের কলকারাখানাগুলির মাত্রাতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ করাকেই দুষছেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, অতিরিক্ত মাল বোঝাই লরি-ট্রাক যাতায়াতে লাগাম টানা উচিত প্রশাসনের। না হলে সে রকম মানের রাস্তা বানাক। শিবেশবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, অবিলম্বে রাস্তার গর্তগুলিকে অন্তত ভরাট করার ব্যবস্থা না করা হলে মিনিবাস ধর্মঘট উঠবে না। বড়জোড়ার বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান বলেন, “রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে মানছি, তবে মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ত দফতর। কাজ হচ্ছে কি না খোঁজ নিয়ে দেখব।” অতিরিক্ত মাল পরিবহণের বিষয়টি জেলাশাসকের নজরে রয়েছে বলে তিনি জানান।
জেলা পূর্ত (সড়ক) দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সৌগত সরকার জানান, ওই রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। শেষ বার এই রাস্তা সারাইয়ের সময় এমটিপিএস কর্তৃপক্ষ আর্থিক সাহায্য করেছিল। নতুন করে রাস্তা মেরামতির কাজ হবে জানিয়ে পূর্ত (সড়ক) দফতর থেকে কয়েক মাস আগে এমটিপিএসকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। এমটিপিএসের ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার অশোককুমার বর্মা বলেন, “চিঠিতে বলা হয়েছিল রাস্তা চওড়া করা হবে। এই বিষয়ে এমটিপিএস কতটা অর্থসাহায্য করতে পারবে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে, তার পর থেকে জেলা প্রশাসন আর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।” |