গুলি-বোমা ছুড়ে রোজনদের জখম করে মেছোভেড়িতে লুঠপাট চালিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ নিয়ে পালালো দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার গভীর রাতে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানার গাজিতলায় এই লুঠপাট চলে। দুষ্কৃতীদের বোমা-গুলিতে জখম হয়েছে ৫ জন। তাঁদের মধ্যে সহিদুল বৈদ্য ও সাত্তার গাজি নামে দু’জনকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সিপিএমের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই লুঠপাট চালিয়েছে। তৃমমূলের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি সিপিএমের। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৩৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূ্ত্রের খবর, গোপালপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রায় ১২৬৫ বিঘা জমি নিয়ে গাজিতলা মেছোভেড়ি। জিয়াদ আলি মণ্ডল, আব্দুল রহমান মণ্ডল, ওবাইদুল মণ্ডল, হাসু মণ্ডল ও ফিরোজ মণ্ডল এই পাঁচ শরিক থেকে বর্তমানে ওই জমির মালিক ১৯৫ জন। সকলেই সেখানে মাছ চাষ করেন। ওই ভেড়ি কার দখলে থাকবে তা নিয়ে এলাকায় সিপিএম এবং তৃণমূলের বিবাদ দীর্ঘদিনের। এক সময় ভেড়ি সিপিএমের হাতে থাকলেও ২০১০-এ বিধানসভা নির্বাচনের পরে তৃমমূলের হাতে চলে যায় ভেড়ির দখল। তার পরে থেকে গোলমাল লেগেই রয়েছে। এ দিন রাত একটা নাগাদ মিনাখাঁর বাছড়া মোহনপুরের দিক থেকে এক দল দুষ্কৃতী ভেড়িতে হামলা চালায়। নেশ প্রহরীরা বাধা দিলে দুষ্কৃতীরা বোমা, গুলি ছুড়তে থাকে। তাতে জখন হন কয়েকজন। খবর পেয়ে হাড়োয়া থানার ওসি বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তবে তার আগেই দুষ্কৃতীরা ভেড়ির অফিস থেকে লক্ষাধিক টাকা এবং পাঁচ কুইন্টালের উপর বাগদা চিংড়ি-সহ অন্যান্য মাছ নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
তৃণমূল নেতা সিত আহমেদ বলেন, “গাজিতলায় সিপিএম দীর্ঘদিন ধরে ভেড়ি দখল করেছিল। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে আমরা তা উদ্ধার করে মালিকদের হাতে দিয়ে দিই। মালিকেরা সকলেই তৃণমূল করে। সেই অপরাধেই এ দিন রাতে ভেড়িতে হামলা ও লুঠপাট চালায় সিপিএমের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএম নেতা ভুবন মণ্ডলের দাবি, “গাজিতলায় কারা হামলা চালিয়েছে জানি না। ওখানে আদৌ দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে না কি নিজেদের মধ্যে গোলমালে এই ঘটনা, পুলিশ সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখুক। তবে এর সঙ্গে সিপিএম কোনওভাবেই জড়িত নয়।” |