|
|
|
|
নিখরচায় পাঠ জেলেই |
ইগনুতে পড়বে ২৬ জন বন্দি
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এতদিন হাতে গোনা দু’চারজন বন্দির পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হত। বেশিরভাগই মাধ্যমিক স্তরে। এ বার এক সঙ্গে ২৬ জন বন্দিকে বিভিন্ন পাঠ্যক্রমে ইন্দিরা গাঁধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইগনু) পড়ার ব্যবস্থা করে দিলেন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। মেদিনীপুর জেল থেকে এই প্রথম এক সঙ্গে এত জনের পড়ার ব্যবস্থা হল। ডিআইজি (কারা) শোভন দীন বলেন, “লেখাপড়ায় ইচ্ছুক বন্দিদেরই ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।” ইগনুর মেদিনীপুর স্টাডি সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর সুব্রত বাগচি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিখরচায় বন্দিদের পড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। এ বারই প্রথম জেল কর্তৃপক্ষ ও আমরা একসঙ্গে তা বাস্তবায়িত করছি।”
প্রায় এক হাজার বন্দি রয়েছে মেদিনীপুর সংশোধনাগারে। কেউ খুনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত, কেউ বা ধর্ষণে। এই সব বন্দিদের পড়ার ইচ্ছে থাকলে সরকার ব্যবস্থা করে দেয়। যেমন, আগামী বছর ২৪ জন বন্দি মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ইতিমধ্যে তারা প্রবেশিকা পরীক্ষাও দিয়েছে। এক জন বন্দি নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পড়ছে। রবীন্দ্র মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েকজন উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে। এই সব প্রতিষ্ঠানে বন্দিদের পড়ার খরচ সরকারকে দিতে হয়। কিন্তু ইগনুতে পড়ার ব্যবস্থা হলে কোনও খরচ লাগে না। উল্টে ইগনুর পক্ষ থেকে জেলখানায় গিয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সংশোধনাগার সূত্রের খবর, ওয়েলফেয়ার অফিসার মহুয়া বাগচি মিত্র বন্দিদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, অনেকেই পড়তে চায়। তারপর ইগনুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কী যোগ্যতায় কোন পাঠক্রমে ভর্তি হওয়া যায় তা বিশদে জেনে ফের বন্দিদের সঙ্গে আলোচনা বসা হয়। ২৬ জন বন্দির মধ্যে ২৪ জনই ভর্তি হয়েছে সার্টিফিকেট ইন ফুড অ্যান্ড টেকনোলজি এবং সার্টিফিকেট ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগে। মাধ্যমিক পাশ হলেই এই দু’টি কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। এক জন ভর্তি হয়েছে বিসিএ এবং এক জন ভর্তি হয়েছে সার্টিফিকেট ইন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কোর্সে।
মেদিনীপুর কলেজ চত্বরে ইগনুর স্টাডি সেন্টার হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। তাহলে আগে কেন বন্দিদের পড়ার ব্যবস্থা করা হয়নি? জেল কর্তপক্ষের কাছে এর সদুত্তর মেলেনি। তবে এ বার যে ২৬ জন ভর্তি হচ্ছেন, তাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে দিকে নজর দিচ্ছেন ইগনু কর্তৃপক্ষ। যত দ্রুত সম্ভব ক্লাস করার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। সুব্রতবাবুর কথায়, “সকলের আবেদনপত্র প্রধান কার্যালয়ে পঠিয়ে দিয়েছি। যাতে দ্রুত ক্লাস শুরু করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।” জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলখানা চত্বরেই একটি পরিত্যক্ত ভবনে আপাতত ক্লাস হবে। তবে বিএ বা এমএ পড়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইগনুতে হিন্দি বা ইংরেজি ছাড়া পঠনপাঠন হয় না বলে বেশিরভাগ বন্দির ক্ষেত্রে সমস্যা থেকে যাচ্ছে। |
|
|
|
|
|