মানুষের প্রয়োজনে সরকারি অনুদানে হাওড়ার জগৎবল্লভপুর পোলগুস্তিয়ায় গড়ে উঠেছিল সুধা সাধারণ পাঠাগার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিকাঠামো ও কর্মীর অভাবে বন্ধ হতে বসেছে সেই পাঠাগার। পাঠাগারের গৃহ নির্মাণের কাজও অর্ধসমাপ্ত। গ্রামের একটি মন্দিরে অস্থায়ী ভাবে পাঠাগারটি চলছিল। কিন্তু বর্তামানে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ফলে নষ্ট হতে বসেছে লক্ষ লক্ষ টাকার বইপত্র এবং আসবাবপত্র।
সুধা সাধারণ পাঠাগারের প্রবীণ সদস্য দিলীপ মাজি বলেন, “১৯৬৩ সাল থেকে জনা কয়েক যুবক মিলে বাড়ি বাড়ি বই সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিলাম। গ্রামের সনাতন দলুইয়ের বাড়ির সদর ঘরে চলত পাঠাগারটি। নাম দেওয়া হয়েছিল সবুজ পাঠাগার। ১৯৮০ সালে গ্রামীণ সরকারি পাঠাগার গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সময়ে এই পাঠাগারটি সরকারি অনুমোদন পায়। কিন্তু পাঠাগারের কোনও নিজস্ব গৃহ না থাকায় অস্থায়ী ভাবে স্থানান্তরিত করে আনা হয় গ্রামের বিন্দুবাসিনী মন্দিরের এক কামরা ঘরে।
গ্রামের বিভূতিভূষণ দে নামে এক ব্যক্তি পাঠাগারের জন্য এক কাঠা জমি দান করে ছিলেন। তাঁর স্ত্রীর নামেই লাইব্রেরীর নামাঙ্কিত হয়। ১৯৯০ সাল নাগাদ সরকারি অনুদানে ওই জমির উপরে সরকারি অনুদানে ভিত গাঁথার কাজ শুরু হয়। কিন্তু তার পরে পাঠাগারের কাজ আর এগোয়নি, বর্তমানে তা জঙ্গল হয়েই পড়ে রয়েছে।” |
এই বাড়িতেই ছিল পাঠাগারটি। —নিজস্ব চিত্র। |
ওই পাঠাগারের গ্রন্থাগারিকের সহকর্মী নিহার চক্রবর্তী বলেন, “গত পাঁচ বছর আগে এই লাইব্রেরীর গ্রন্থাগারিক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বদলি হয়ে বড়গাছিয়া ধর্মতলা লাইব্রেরীতে চলে যান। তারপর থেকে আমিই ওই লাইব্রেরী চালাতাম। কিন্তু এক বছর পর আমাকেও মাজু পাবলিক লাইব্রেরীতে বদলি হয়ে যেতে হয়। এরপরই পাঠাগারটি কর্মীহীন হয়ে বন্ধ হয়ে যায়।” ওই পাঠাগারের সদস্য অরুণ মাজি বলেন, “পাঠাগারটি আগে খুব জমজমাট ছিল। পড়ার বই, গল্পের বই এবং ম্যাগাজিনের সংখ্যা বাড়ছিল। স্কুল ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা হত। পরের দিকে সময়মত খোলা বন্ধ হত না।”
পাঠাগারের সেক্রেটারি প্রতাপ মাজি বলেন, “চার বছর ধরে পাঠাগারটি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। পাঠাগারটির নিজস্ব গৃহ তৈরির কাজও শেষ হয়নি। বার বার বলেও সমস্যার সুরাহা হয়নি।” অন্যদিকে, জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় মিত্র বলেন, “জেলায় বেশ কয়েকটি পাঠাগার বন্ধ হয়ে আছে। তবে এই সমস্ত পাঠাগারগুলি খোলার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।” |