টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে নদী, বাড়ছে আশঙ্কা
ল্পস্বল্প বর্ষণ শুরু হয়েছিল সোমবার থেকেই। মঙ্গলবার সেই বৃষ্টি থামার লক্ষ্মণ নেই। আর বুধবার তার সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া যোগ হয়ে কার্যত গৃহবন্দি করে ফেলল শিল্পাঞ্চলের মানুষকে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আসানসোল ও দুর্গাপুর শহরে বিশেষ জল না জমলেও বৃষ্টি চলতে থাকলে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন শহরবাসী।
এমন আবহাওয়ার জেরে বুধবার শিল্পাঞ্চল জুড়েই যানবাহন চলেছে কম। অনেক জায়গায় দোকানপাটও ছিল বন্ধ। যেসব ব্যবসায়ী দোকান খুলেছিলেন, ক্রেতার অভাবে তাড়াতাড়ি বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যান। নেহাত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোননি কেউ। সপ্তাহের মাঝের দিন হলেও অনেকেই বাড়িতে ছুটি কাটিয়েছেন।
ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইথন জলাধারে বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৪৩.৬১ মিটার উচ্চতার জল রয়েছে। পাঞ্চেতে সেই পরিমাণ ১২৪.৫৯ মিটার। প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর মাইথনের জলস্তর ১৮৫ হেক্টোমিটারে বাড়ছে। পাঞ্চেতে বাড়ছে ৬৯২ হেক্টোমিটারে। পাঞ্চেত থেকে রোজ ১৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে।

জল থইথই আসালসোল স্টেশন যাওয়ার রাস্তা। ছবি: শৈলেন সরকার।
টানা বৃষ্টিতে প্রমাদ গুণতে শুরু করেছেন আসানসোলের রেলপাড় এলাকার পাড়ের বাসিন্দারা। এই এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া গাড়ুই নদীর পাড় ঘেঁষে জনবসতি গড়ে উঠেছে। বেশ কিছু এলাকায় নদীর গতি রোধ করে নির্মাণ হয়েছে। ফলে, নদী স্বাভাবিক গতিপথ হারিয়েছে। নিয়মিত সংস্কারের অভাবে নাব্যতাও কমছে। আশপাশের আবর্জনাও ফেলা হয় নদীতে। এ সব কারণে বেশি বৃষ্টি হলেই নদীর দু’কূল ছাপিয়ে যায়। বাড়িতে জল ঢুকে নাকাল হন বাসিন্দারা। এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাড়ুই নদী স্ফীত হয়ে উঠেছে। আশাপাশের মুৎসুদ্দি মহল্লা, ভিস্তি মহল্লা, হাজিনগর, রামকৃষ্ণ ডাঙাল-সহ নানা অঞ্চলের মানুষ জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন। গাড়ুই নদীর উপরে কসাই মহল্লার লোহাপুল, সিদ্দিক সেতু ও একবাল সেতু লাগোয়া এলাকার অবস্থা ভাল নয়। পুরসভা সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, নিকাশি ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত সাফাইকর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে। কিছুটা একই পরিস্থিতি কুলটি পুরসভার বিষ্ণুপ্রিয়া কলোনি ও ঋষি অরবিন্দ নগর এবং বরাকর নদ লাগোয়া এলাকায়। অপেক্ষাকৃত নিচু এই সব জায়গায় প্রতি বছরই টানা বর্ষণে জল দাঁড়িয়ে যায়।

জল জমেছে দুর্গাপুরের গ্যামন ব্রিজ এলাকায়।
আসানসোলে বরাকরমুখী জি টি রোডের নানা জায়গায় অস্থায়ী ভাবে মাটি ও ঝামা ইট দিয়ে ভরাট করা গর্তগুলি বর্ষায় ফের বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। চিত্তরঞ্জন রোডের প্রায় ১৩ কিলোমিটার রাস্তায় অসংখ্য গর্ত রয়েছে। দেন্দুয়া মোড় লাগোয়া এক কিলোমিটার রাস্তাতেও হাঁটুসমান গর্তে জল ভরে রয়েছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে। টানা বৃষ্টি চললে এই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে বলে দাবি চালকদের। দুর্গাপুরেও নানা রাস্তায় খানাখন্দ জলে ভরে যাওয়ায় বিপদের আশঙ্কায় ভুগছেন চালকেরা।
দুর্গাপুরেও এ দিন রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। যে সব বাস চলেছে তাতে যাত্রীর তেমন দেখা মেলেনি। বেশ কিছু রাস্তার পাশে জল জমে গিয়েছে। ঝড়ে কিছু কিছু জায়গায় গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে। শহরের এক দোকান মালিক নারায়ণ সূত্রধর সকালে বলেন, “সারা দিন যে ভাবে বৃষ্টি হয়েছে তাতে কেউ বাইরে আসছেন না। এ রকম হতে থাকলে আর বিকেলে দোকান খুলব না।” শহরের এ-জোনের বাসিন্দা অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “বাইরে কাজ ছিল। কিন্তু এই বৃষ্টি সব পণ্ড করে দিয়েছে। সারাদিন বাড়িতে বসে জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখছি।” বেসরকারি সংস্থার কর্মী অমিত বাসুরির কথায়, “যে ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাতে কাজে যাওয়ার উপায় নেই। বাড়িতে বসে সবার সঙ্গে আজ ছুটি কাটাচ্ছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.