|
|
|
|
জখম ৩০ |
অপহরণের অভিযোগ, গোলমাল সিপিএম তৃণমূলের
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বামফ্রন্টের সাত জন নির্বাচিত সদস্যকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইটাহার ব্লকের দুর্গাপুর ও কাপাসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা। একাধিক সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ৩০ জন সমর্থক জখম হয়েছেন। স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অপহৃতদের উদ্ধার, বোর্ড গঠন স্থগিত ও অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থকদের গ্রেফতারের দাবিতে সিপিএম সমর্থকরা সকাল ১০টা থেকে প্রায় চারঘন্টা দুর্গাপুর এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও বেলা ১২টা থেকে প্রায় দুঘন্টা ইটাহার-চাঁচল রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। ইটাহার-চাঁচল রাজ্য সড়কে উত্তেজিত সিপিএম সমর্থকেরা পুলিশের একটি জিপে ভাঙচুর চালিয়ে পুলিশ কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়েন বলেও অভিযোগ প্রতিবাদে দুর্গাপুর ও কাপাসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত বামফ্রন্ট সদস্যরা বোর্ড গঠনে হাজির না হওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেদের সমর্থনে দুটি পঞ্চায়েতরই দখল নিয়েছে তৃণমূল। দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূলের ডলি বর্মন ও বিলকিস খাতুন। কাপাসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ হাসিরুদ্দিন। আইনি জটিলতার জেরে এদিন ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নির্বাচন হয়নি। |
|
অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থকদের গ্রেফতারের দাবিতে অবরোধ করে বিক্ষোভ
দেখাচ্ছেন সিপিএম সমর্থকরা। রবিবার তরুণ দেবনাথের তোলা ছবি। |
তৃণমূল বোর্ডের দখল নিতেই সিপিএমের কর্মী সমর্থকেরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে পথ অবরোধ তুলে নেন। জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘সিপিএমের তরফে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে যাঁরা অপহৃত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের পর তাঁরা সকলেই এলাকায় ফিরে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুর্গাপুর ও কাপাসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফল ত্রিশঙ্কু হয়েছে। দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস একটি, বামফ্রন্ট নয়টি ও তৃণমূল আটটি ও নির্দল একটি আসন দখল করেছে। তৃণমূলের দাবি, ওই কংগ্রেস সদস্য এদিন তৃণমূলে যোগ দেন। অন্যদিকে, কাপাসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট ১০টি, তৃণমূল সাতটি ও কংগ্রেস তিনটি আসন দখল করেছে। কয়েকদিন আগে অবশ্য কংগ্রেসের ওই তিন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। সিপিএমের অভিযোগ, সকালে বোমাবাজি করে স্থানীয় একটি হাইস্কুলে শিবির করে থাকা দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত চারজন মহিলা সদস্যকে তৃণমূল সমর্থকেরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে আটকে রাখে। অভিযোগ, সিপিএম সমর্থকেরা বাঁধা দিতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। চলে বোমাবাজিও। অন্যদিকে, এদিন ইটাহার থেকে বামফ্রন্টের নির্বাচিত সদস্যরা গাড়িতে কাপাসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বোর্ড গঠন করতে যাচ্ছিলেন। সেইসময় পঞ্চায়েতের অদূরে তৃণমূল সমর্থকেরা বামফ্রন্ট সমর্থকদের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। গাড়িটিতে ভাঙচুর চালিয়ে তিনজন সদস্যকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানেও সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, “তৃণমূল জোর করে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করতে বামফ্রন্ট সদস্যদের অপহরণ করার পাশাপাশি সন্ত্রাস চালিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে বামফ্রন্ট সদস্যরা বোর্ড গঠনে সামিল হননি। বোর্ড গঠনের পর অপহৃত বাম সদস্যদের তৃণমূল সমর্থকেরাই এলাকায় পৌঁছে দেয়।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “প্রধান পদের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে দুর্গাপুর ও কাপাসিয়া পঞ্চায়েতের সিপিএম গোষ্ঠী কোন্দল ছিল। ওঁদের নিজেদের লোকজনই অপহরণের পিছনে রয়েছে।” |
|
|
|
|
|