দু’দলের কোন্দলে গুলিতে জখম ছাত্র
সলামপুরের কমলাগাঁও সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালগছের বাসিন্দা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ১২ বছরের মহম্মদ কাইজার। রাজনীতির কিছুই বোঝে না সে। বোঝার কথাও নয়। তবুও সেই রাজনৈতিক সংঘর্ষের শিকার হতে হল তাকে। দুষ্কৃতীদের গুলিতে আহত হয়েছে কাইজার। বর্তমানে সে ইসলামপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা সিপিএমের দিকে অভিযোগ করেছে। ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উত্তর দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা বলেন, “এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। অভিযোগ জমা পড়েনি।” পুলিশ জানিয়েছে, এদিন পরিবারের সকলের জন্য মুড়ি কিনতে বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরের একটি দোকানে গিয়েছিল ওই বালক। হঠাৎই এক দল দু্ষ্কৃতী এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে বলে অভিযোগ। গোলমালের মাঝে পড়ে প্রাণ ভয়ে ছুটতে থাকে কাউজার। কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও একটি ছররা গুলি লাগে তার ডান পায়ে। সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। গুলির আওয়াজ পেয়েই বালকের পরিবারের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। কাইজার বাদেও ওই ঘটনায় তাদের এক সমর্থক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে সিপিএমের দাবি।
হাসপাতালে কাইজার। রবিবার ছবিটি তুলেছেন অভিজিৎ পাল।
কাইজারের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, এলাকায় গোমাদিঘি হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র কাইজার। বাবা মহম্মদ আসিম মানসিক ভারসাম্যহীন। কাইজারের পড়াশুনা থেকে সংসার চালানো সমস্ত দায়িত্বই রয়েছে দাদা মহম্মদ হামিদূলের উপর। তিনি ভিনরাজ্যে থাকেন। সম্প্রতি ইদ উপলক্ষে তিনিও বাড়িতে এসেছেন। হামিদূল জানান, এদিন সকালে বাড়ির পাশের দোকানে ভাই মুড়ি কিনতে গিয়েছিল। গুলির আওয়াজ পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি ভাই পড়ে রয়েছে রাস্তার মধ্যে। তড়িঘড়ি ওকে ইসলামপুর হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমরা কোনও দল করিনা। তার পরেও ভাইকে আহত হতে হয়েছে। ও প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই রীতিমত আতঙ্কিত কাইজার। সে জানায়, দোকানে ছিলাম। কয়েকটা লোককে দেখি দৌঁড়াতে। গুলির মত আওয়াজ পাই। ভয়ে বাড়িতে দিকে দৌঁড়াই। অনেক লোক ছিল। পায়ে যেন কিছু এসে লাগে। খুব ব্যথা হচ্ছিল। পুলিশ জানায়, ঘটনায় মহম্মদ ইয়াসিন নামে এক সিপিএম সমর্থকও গুলিবিদ্ধ হন। তার পিঠেও ছররা গুলি লাগে। মহম্মদ ইয়াসিন জানান, বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাজে যাচ্ছিলাম। তখনই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সুবীর বিশ্বাস বলেন, “তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ওই কাজ করেছে। যেভাবে একটি বালক আহত হয়েছে। তাতে এটা অমানবিক কাজ ছাড়া কিছু নয়। পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরছে না।”
তবে সন্ত্রাসের পিছনে সিপিএমের হাত রয়েছে বলে দাবি করেন তৃণমূলের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি মেহেতাব চৌধুরী। তিনি বলেন, “এলাকাতে সিপিএমের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। এতেই গোলমাল হচ্ছে। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত শনিবার কমলাগাঁও সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ১৬ জন সিপিএম কর্মী আহত হন। তাঁদের কয়েকজন ছররা গুলিতে জখম হন বলে অভিযোগ। ১৮ আসনের পঞ্চায়েতে সিপিএম ১২টি, তৃণমূল ৫টি এবং কংগ্রেস ১টি আসন পায়। কিন্তু গোলমালের জেরে সিপিএম সদস্যরা পঞ্চায়েত দফতরে যেতেই পারেননি বলে অভিযোগ। কংগ্রেস ও তৃণমূল বোর্ডের দখল নেয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.