|
|
|
|
স্ত্রীকে ডেকে কুপিয়ে খুন
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
বিবাদ মেটাতে আলোচনার নাম করে স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ডেকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাতকাটার নাউয়াপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতের নাম শীলা ওরাওঁ (২৫)। দক্ষিণ বেরুবাড়ির দইখাতা এলাকার বাসিন্দা শীলাদেবীর সঙ্গে ২০০৪ সালে ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের বাসিন্দা প্রকাশ ওঁরাওয়ের বিয়ে হয়। তাঁদের দুটি মেয়েও রয়েছে। স্বামীর বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বছর দুয়েক আগে শীলাদেবী বাপের বাড়িতে চলে আসেন। গত শনিবার রাতে শীলাদেবীকে বাইকে চাপিয়ে ডেঙ্গুয়াঝাড়ে নিয়ে আসেন স্বামী বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট প্রকাশ ওঁরাও। তবে নিজের বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে কিছুটা দূরে মাসি জুনিতা টোপ্পোর বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে যায় প্রকাশ। ঘরে ঢুকে কাউকে কিছু না বলে, পেছনের উঠোনে শীলা দেবীকে টেনে নিয়ে গিয়ে, ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন শীলাদেবী। চিৎকার শুনে প্রকাশের মাসি জুনিতা দেবী সহ অন্যরা বেরিয়ে এলে প্রকাশ পালিয়ে যায় বলে পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশে খবর দেওয়া হলে রাত ১২টা নাগাদ জলপাইগুড়ি কোতোয়ালির আইসি অভিজিৎ দাসের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে শীলাদেবীর দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শীলাদেবীর বুকে, পিঠে, মুখে, হাতে কোপানো হয়েছে।
ভোজালি জাতীয় অস্ত্র দিয়েই শীলাদেবীর শরীর জুড়ে আঘাত করা হয়েছে বলে পুলিশ মনে করছে। স্ত্রীকে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ে অস্ত্রটিও প্রকাশের সঙ্গে ছিল বলে পুলিশ মনে করছে। খুনের পরে অস্ত্রটি সঙ্গে নিয়েই পালিয়ে যায় প্রকাশ। জেলার পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে গোলমাল চলছিল বলে জানা গিয়েছে। শনিবার স্ত্রীকে বাপের বাড়ির থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর স্বামী প্রকাশ ওঁরাও খুন করেছে বলে প্রাথমির তদন্তে জানা গিয়েছে। প্রকাশকে খোঁজা হচ্ছে।”
বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই ছিল বলে শীলাদেবী পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। দু বছর আগে শীলাদেবী দুই মেয়েকে নিয়ে পাকাপাকি ভাবে বাপের বাড়ি চলে যান। মাস দেড়েক আগে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও দায়ের করেন শীলাদেবী। গত শুক্রবার প্রকাশ ওঁরাও দইখাতায় শীলাদেবীর বাপের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চায় বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার রাতে ওই বাড়িতেই থাকার পরে শনিবার স্ত্রীর সঙ্গে সব ভুল বোঝাবোঝি মিটিয়ে নতুন করে সংসার করবে বলে সকলকে জানিয়ে শীলাদেবীকে নিয়ে ডেঙ্গুয়াঝাড়ে রওনা দেন। দুই মেয়ে অবশ্য শীলাদেবীর বাবার কাছেই রয়েছে।
নিহতের বাবা রমেশরাম ভগৎ বলেন, “প্রকাশ মাঝেমধ্যে এসেই শীলার সঙ্গে ভাল ভাল কথা বলত। পরে আবার মারধর করত। শনিবার সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে, ‘এ বার নতুন করে সংসার শুরু করব’ বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। রবিবার সকালে মেয়ের মৃতদেহ দেখে চমকে উঠেছি।” রবিবার পুলিশের পক্ষ থেকেই তাদের খবর পাঠানো হয় বলে রমেশরামবাবু জানান। প্রকাশের বাইক এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। |
|
|
|
|
|