|
|
|
|
ডুয়ার্সে বাসে বোমা ফেটে জখম ৩ যাত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন |
আর পাঁচটা দিনের মতো যাত্রীদের খাওয়ানোর জন্য বাসটি নির্দিষ্ট স্টপে দাঁড়িয়েছিল। অধিকাংশ যাত্রী খেতে নামার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাসে বিস্ফোরণ! জখম হলেন বাসের ভিতরে থাকা তিন যাত্রী। রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ ডুয়ার্সের কুমারগ্রাম থানার বারোবিশা চৌপথির এই ঘটনা।
আহতদের কামাখ্যাগুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কারও আঘাতই তেমন গুরুতর নয় বলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রের খবর।
যে বাসে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি ভুটানের গ্যালেফু লাগোয়া অসমের ছিরাং জেলার দাতগিরি থেকে জয়গাঁ যাচ্ছিল। বাসটি অসমের। সকাল ৯টায় বাস ছাড়ার সময়ে জনা দশেক যাত্রী ছিলেন। অসমের গোসাইগাঁও-সহ কয়েকটি এলাকা থেকে আরও ১২ জন যাত্রী ওঠেন বলে পুলিশ জেনেছে। বিস্ফোরণের সময় অবশ্য বাসে পাঁচ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন না।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, বাসের পিছনে মালপত্র রাখার জায়গায় বোমাটি ছিল। বিস্ফোরণে পিছনের অংশ দুমড়ে যায়। ছাদের অনেকটা উড়ে যায়। কাচ ও স্প্লিন্টার ছিটকে কয়েক জন জখম হন। |
|
বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত সেই বাস। কুমারগ্রামে। ছবি: রাজু সাহা। |
ডুয়ার্সের বারোবিশাকে বিস্ফোরণের জন্য বেছে নেওয়া এবং বিস্ফোরণের কায়দা দেখে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সন্দেহের তির আপাতত কেএলও (কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন) জঙ্গিদের দিকে। ইতিমধ্যেই পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে এক হয়ে গিয়েছে ‘কামতাপুর পিপলস পার্টি’র দুই বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। ২১ অগস্ট জলপাইগুড়িতে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিও রয়েছে কেপিপি-র। তার আগে কেএলও জঙ্গিদের সক্রিয় হয়ে ওঠার আশঙ্কা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। সম্প্রতি নিম্ন অসম ও ডুয়ার্সে কেএলও-র সক্রিয়তার খবরও রয়েছে।
বোমাটি যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল বলেই পুলিশ জানিয়েছে। চলন্ত অবস্থায় সেটি ফাটলে আর বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। বিস্ফোরণস্থল থেকে একটি ব্যাটারি ও বিদ্যুৎবাহী তার মিলেছে।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, টাইমার দিয়ে বোমাটি রাখা হয়। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “কী ধরনের বিস্ফোরক রাখা ছিল, তা পরীক্ষা করে দেখছেন সিআইডির বোমা বিশেষজ্ঞেরা। কোনও জঙ্গি সংগঠন যুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বাসের ভিতর থেকে ‘ন্যাশনাল লিবারেশন ফোর্স অব বেঙ্গলি’ নামে একটি সংগঠনের চিঠি পাওয়া গিয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, অসমে বড়োল্যান্ডের সমর্থনে একের পর এক ব্যক্তিকে অপহরণ ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, এ দিন বাসটি নির্ধারিত সময়ের মিনিট কুড়ি আগেই বারোবিশা পৌঁছয়। ফলে, হয়তো বোমাটিকে অসমের কোথাও ফাটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল পারেও পুলিশের একাংশ মনে করছে। তবে, এমন কোনও সংগঠনের অস্তিত্ব এর আগে অসমে পাওয়া যায়নি বলে সে রাজ্যের পুলিশ সূত্রের খবর। রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের একাংশের খবর, বিস্ফোরণের পরে নজর অন্য দিকে ঘোরাতেও ওই সংগঠনের নাম ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। |
|
|
|
|
|